6 years ago#11
Joined:09-09-2017Reputation:0
Posts: 302 Threads: 7
Points:2210Position:PV1

কোন কূলে যে ভীড়ল তরী/কামদেব

[৮]

স্কুলের সেশন শুরু হয়ে গেছে। বাইওলজি নিয়ে পল্টু উচ্চ মাধ্যমিক পড়ছে।সঞ্জয় বিজ্ঞান বিভাগে সুযোগ না পেয়ে অন্য স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছে।পাড়াগত সম্পর্কে দুজনের বন্ধুত্বে ছেদ পড়েনি। তবে বাড়ীতে না গেলে পরস্পর খুব একটা দেখা  হয়না। বাপির কথাটা ঘুরে ফিরে মনে আসে ডাক্তারিতে ভর্তি হলে সার্টিফিকেট মিললেও ডাক্তার হওয়া যায় না।আর একটা কথা একই স্কুলে একই শিক্ষকের কাছে পড়ে সকলেই একই ফল করে না। স্কুলে পারমিতা যেচে আলাপ করলেও পল্টুর মনে তেমন দাগ কাটতে পারেনি। নীরার ব্যবহার মেয়েদের প্রতি মনোভাব বদলে দিয়েছে।
ড.অনলদেব সোম কদিন বিশ্রামের পর বেরোতে শুরু করেছেন।রোগী দেখা শেষ হলে মিসেস রাও এসে বললেন,স্যার এক ভদ্রমহিলা বসে আছেন।
--কেন?
--এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট ছিল না।মিসেস রাও ইতস্তত করে বললেন।
--আচ্ছা পারু আমাকে দেখে কিছু বুঝতে পারছো?
মিসেস রাও এ ধরণের প্রশ্নের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না।বুক কেপে উঠল।এত বছর ওর আণ্ডারে কাজ করছেন অনেক কথা হয় কিন্তু ব্যক্তিগত কোনো বিষয় নিয়ে কখনো কথা হয়েছে বলে মনে পড়ে না।আজ স্যারের মুড একটু অন্য রকম। অনেক দিন পর তাকে পারু বলে ডাকলেন।তবু নিজেকে সংযত করে বলল,স্যার আপনি ড্রিঙ্ক ছেড়ে দিয়ে ভালই করেছেন।
ড.সোম হাসলেন,মনুর কথা মনে পড়ল।কি করছে একা একা কে জানে।তারপর মিসেস রাওয়ের দিকে তাকিয়ে কি ভেবে বললেন,কে বসে আছে বললেন,দিন পাঠিয়ে দিন।
মিসেস রাও ভদ্রমহিলাকে নিয়ে টেবিলে শুইয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,আপনার নাম?
--মিস খাদিজা আক্তার অঞ্জনা।
--বয়স?
--থার্টি ফাইভ প্লাস।
মিসেস রাও ওজন প্রেশার নিয়ে অপেক্ষা করেন।ড.সোম পাশের ঘর থেকে এসে রোগী পরীক্ষা করতে করতে জিজ্ঞেস করলেন,কি সমস্যা?
--ফিলিং আন ইজি স্যার।
ড.সোম মাটির দিকে তাকিয়ে কি ভাবলেন।তারপর জিজ্ঞেস করলেন,ম্যারেড?
--ডিভোর্সি স্যার।
ড.সোম নিজের চেম্বারে ফিরে গিয়ে মিসেস রাওকে বললেন,ওকে পাঠিয়ে দিন।
ড.সোম চেয়ারে বসে পেপারওয়েট নিয়ে নাড়াচাড়া করছেন,এমন সময় বেশবাস ঠিক করে মিস অঞ্জনা প্রবেশ করতে ড.সোম বললেন,বসুন।
মিস অঞ্জনা চেয়ারে বসতে ড সোম বললেন,আপনাকে একটু ব্যক্তিগত প্রশ্ন করতে পারি?
মিসেস রাও একটু অবাক,স্যারকে আগে কারো সঙ্গে এভাবে কথা বলতে শোনেন নি। ব্যক্তিগত প্রশ্ন বলতে তিনি অন্য ঘরে চলে গেলেন।
মিস অঞ্জনা বললেন,নো প্রবলেম স্যার।
--আপনি হার্ট স্পেশালিষ্টকে দেখাবার কথা কেন ভাবলেন?
--বুক ধড়ফড় করে তাই ভাবলাম মানে...।
--যদিও আমার বিষয় নয় তবু বলছি,শরীরের সঙ্গে মনের একটা গভীর সম্পর্ক থাকে।অনেক সময় মনের সমস্যা শারীরিক সমস্যা বলে আমাদের মনে হতে পারে।আপনার হার্টের কোন সমস্যা দেখলাম না।
--স্যার আমি আপনার পাড়ায় থাকি।
ড.সোম মৃদু হাসলেন।
--স্যার হাসছেন?
--এর সঙ্গে রোগের কোনো সম্পর্ক নেই।কিছু মনে না করলে একটা কথা জিজ্ঞেস করছি।
মিস অঞ্জনার মনে হল ভদ্রলোক রুঢ়ভাষী।তবু কি জিজ্ঞেস করেন তার জন্য কান খাড়া করে থাকেন।
--আপনার ডিভোর্স হয়েছে কতদিন?
--তিন-চার বছরের উপর।
--বুঝলাম না,মানে?
মিস অঞ্জনা মনে হিসেব করে বললেন,চার বছর ন-মাস।
--ইউ লুক ভেরি ইয়াং,আবার বিয়ে করে ফেলুন।হ্যাপি রিলেশন অনেক সময় খুব ভাল কাজ দেয়।আফটার অল আমরা মানুষ জন্তু জানোয়ারের কথা আলাদা।নিঃসঙ্গতা মানুষের অনেক রোগের কারণ।গুড নাইট।
মিস অঞ্জনা ইঙ্গিতটা বুঝতে পেরে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,ওষুধ দেবেন না?
--বাইরে অপেক্ষা করুণ,মিসে রাও ডাকবেন।ড.সোম ঘুমের ওষুধ প্রেসক্রিপশন করে দিলেন।
দাদা এসেছে শুনে মনোরমা নীচে নেমে এলেন। বসার ঘরে সোফায় হেলান দিয়ে একটা ম্যাগাজিনের পাতা ওল্টাচ্ছেন দেবব্রত।মনোরমা ঢুকে জিজ্ঞেস করেন, কেমন আছো?
সোজা হয়ে বসে দেবব্রত বললেন,বোস মনো।
মনোরমা সামনে বসে ভাবছেন আজ আবার কি উদ্দেশ্যে দাদার আগমন।অনু থাকলে আসে না,এই ব্যাপারটা ভাল লাগে না। অনু তো কখনো তাকে অসম্মান করে নি,তবে কি আজেবাজে গল্প রাজনীতি অনুর পছন্দ নয়।
দেবব্রত বললেন,তোর বৌদি এখন ভাল আছে।আমার খুব চিন্তা ছিল ড.সেনের নাম তো কম নয়। অনল বলল,পেস মেকারের দরকার নেই।খুব চিন্তায় পড়ে গেছিলাম। হাতে টাকা পয়সা নেই কি করবো?যা থাকে কপালে ভাবলাম দরকার নেই ওইসব পেসমেকার ফেকারের--হা-হা-হা।
মনোরমার এইসব আলোচনা ভাল লাগছিল না,জিজ্ঞেস করলেন,তোমাকে চা দিয়েছে?
--হ্যা-হ্যা তুই ব্যস্ত হোস না তোদের ঝি-টা এদিক দিয়ে খুব ভাল,চা দিয়েছে অমলেট করে দিয়েছে।
মনোরমা তাকিয়ে দেখলেন কাছাকাছি মিতা আছে কিনা?
--তবে কি জানিস মনো,একটা ব্যাপার খুব খারাপ লেগেছে।দেবব্রত বললেন।
--কি ব্যাপার দাদা?
--অনল আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে।
মনোরমা হাসি চেপে বললেন,ও কারো কাছ থেকে নিজে হাত পেতে টাকা নেয় না।কেবল রোগী দেখে।কত নিয়েছে?
--নিজে না নিলেও ঐ তো পাবে। একবারই দেখিয়েছি--দুশো টাকা।
--আচ্ছা তুমি বোসো,আমি আসছি।
--আমার একটু তাড়া আছে বেশিক্ষণ বসবো না।
মনোরমা উপরে গিয়ে শ-তিনেক টাকা নিয়ে নেমে এলেন।দাদার হাতে দিয়ে বললেন, কোনো অসুবিধে হলে তুমি আমাকে বোলো।
দেবব্রত টাকা হাতে নিয়ে বললেন,এতো তিনশো?
--ঠিক আছে হাসি-খুশিকে বোলো পিসি মিষ্টি খেতে দিয়েছে।দাদা ওদের এখন কোন ক্লাস?
--নাইন,সামনের বছর টেন হবে।দুজনের এত মিল মাঝে মাঝে তোর বৌদিরও ভুল হয় কোনটা হাসি আর কোনটা খুশি।হা-হা-হা।
একরাশ হাসি ছড়িয়ে দেবব্রত বিদায় নিতে মনোরমা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন।
বাড়ী ফেরার পথে শুনতে পেলাম কে যেন পল্টুদা -পল্টূদা বলে ডাকছে।পিছন ফিরে দেখি লায়লি ছুটতে ছূটতে আসছে।কি ব্যাপার মনে হল লায়লির থেকে কিছুটা দূরে কে যেন গলির ভিতর ঢুকে গেল।কাছে এসে লায়লি বলল,পল্টুদা আমাকে একটু এগিয়ে দেবে?
লায়লিদের ফ্লাট পেরিয়ে আমাকে যেতে হয়। কিন্তু লায়লিকে দেখে কেমন সন্তস্ত্র মনে হল জিজ্ঞেস করলাম,তুমি ছুটছিলে কেন?
লায়লি একটু দম নিয়ে বলল,জানো প্রতি দিন স্কুল থেকে ফেরার পথে বিরক্ত করে।
--কে বিরক্ত করে?
--ঐ গুণ্ডাটা।শালা ফেল করেও লজ্জা নেই--হারামী।
কি বিশ্রী মুখ লায়লির,মেয়েদের মুখে এই সব শব্দ শুনতে ভাল লাগে না। পাড়ার মেয়ে কিছু বলতে পারি না।
--কিন্তু এভাবে কতদিন তুমি পালাবে,গুণ্ডাটাকে তুমি চেনো?
--দিলীপ,শীলা আণ্টির ছেলে।এবার ওর মাকে বলতে হবে।
দিলীপ উচ্চ মাধ্যিমিক পরীক্ষা দিয়েছিল,পাস করতে পারে নি।ওর বাবা নিরীহ মানুষ কিন্তু বউয়ের কথায় চলেন।দিলীপকে দেখেছিল বরুণদের বাগানে লায়লির সঙ্গে অসভ্য করতে চেষ্টা করছিল।সারাক্ষণ দুজনে একসাথে ছিল পিকনিকের দিন। এখন গুণ্ডা হয়ে গেল?
ওর বাড়ীর কাছে পৌছে বললাম,তোমার মাকে সব খুলে বলো।
--থ্যাঙ্ক ইউ পল্টুদা।লায়লি ফিক করে হেসে চলে গেল।
কিবা বয়স বড় জোর কুড়ি-একুশ হবে।এর মধ্যেই ছেলে সঙ্গ পাবার জন্য এত আকুলতা।দিলীপ শুনেছি ইদানীং মাঝে মাঝে নেশা করে।
দোতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে সঞ্জয়। চোখাচুখি হতে জিজ্ঞেস করলাম,স্কুলে যাসনি?
--এই ফিরলাম।আসবি?
অনেকদিন ওদের বাসায় যাইনি।এখন না গেলে ভাববে আমি ওকে এড়িয়ে যাচ্ছি। রাঙা পিসি আমাকে দেখে এমন করে ভয় হয় জানাজানি হলে কি বিশ্রী ব্যাপার হবে। উপরে উঠতে নীরা জিজ্ঞেস করলো, কি ব্যাপার পল্টুদা পথ ভুলে নাকি?
নীরা বাড়িতে আছে জানতাম না।একটা সময় ছিল নীরার মুখ দেখলে মন ভরে যেত, এখন আর তেমন হয় না।শুষ্ক হাসি হেসে বললাম,সঞ্জয় ডাকল তাই।
--ও না ডাকলে বুঝি আসা যায় না?
মনে মনে ভাবি কি জন্য আসবো তোমার মুখে পাকা পাকা কথা শোনার জন্য আসবো? পছন্দ মত বেছে নিয়েছে তবে কেন আমার পিছনে লেগে আছে বুঝতে পারছি না বললাম,না ডাকলে গেলে খেলো হয়ে যেতে হয়।
--মোটেও না,এ তোমার কমপ্লেক্স।যাক বাদ দাও,পারমিতা তোমাদের স্কুলে ভর্তি হয়েছে তাইনা?
--কে পারমিতা?
--আমাদের স্কুলের বেষ্ট গার্ল।
--ও হ্যা মেয়েটা ভারী ন্যাকা,ব্যাঙ কাটতে গিয়ে এমন করছিল যেন কোনোদিন ব্যাঙ দেখেনি।অত যদি ভয় তাহলে বাইওলজি পড়তে এলি কেন?
--তোদের ব্যাঙ কাটা শুরু হয়ে গেছে?সঞ্জয় জিজ্ঞেস করলো।
--হ্যা টুয়েলভ ক্লাসে শুরু হল।
নীরা চুপি চুপি কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,কেমন দেখতে বলো?পল্টুদা লেগে যাও।
এতক্ষণে ফুলটস বল পেয়েছি ব্যাট তুলে হাকড়াবার মত বললাম,স্কুলে পড়তে গিয়েছি, প্রেম করতে নয়।
নীরা চুপ করে গেল,আমি সঞ্জয়কে জিজ্ঞেস করলাম,কাকীমা নেই?কাকীমাকে দেখছি না।
--কে মা? মা রাঙা পিসিকে স্নান করাচ্ছে।নীরা তুই চা কর না।
--এখন স্নান?অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম।
--স্নান মানে গামছা ভিজিয়ে গা হাত পা স্পঞ্জ করে দিচ্ছে।আয় আমরা ঐ ঘরে বসি।
সঞ্জয় হাসতে হাসতে জিজ্ঞেস করে,ব্যাঙ-এর জনন তন্ত্র দেখেছিস?
কিছু বললাম না,ওর সেই বাগানে পোদ উচিয়ে থাকা দৃশ্যটা মনে পড়ে গেল। মানুষের জনন তন্ত্রের ছবি দেখেছি,ছবিতে ভাল বোঝা যায় না। নীরা চা নিয়ে ঢূকলো।প্রসঙ্গ বদলাতে আমি বললাম,রাস্তায় লায়লির সঙ্গে দেখা হল,দিলীপকে গাল মন্দ করছিল।
--ওদের তো কেটে গেছে।নীরা হেসে বলল।
আমি নীরাকে দেখলাম,কেটে যাওয়া জোড়া লাগা কত সহজে উচ্চারণ করে এরা। চায়ে চুমুক দিয়ে বললাম, আরো কত মারামারি কাটাকাটি হবে কে জানে।
নীরা খিল খিল করে হেসে উঠল বলল,পল্টুদাটা এমন কথা বলে না--।
--দিলীপটা দিন দিন কেমন হয়ে যাচ্ছে।সঞ্জয় বলল।
আমি কোনো উত্তর দিলাম না।দিলীপ আমার খুব কাছের বন্ধু ছিল।ইদানীং কেমন দূরে সরে যাচ্ছে।ওর জন্য খুব খারাপ লাগে।মানুষ কিভাবে বদলে যায় ভাবি।
6 years ago#12
Joined:09-09-2017Reputation:0
Posts: 302 Threads: 7
Points:2210Position:PV1

কোন কূলে যে ভীড়ল তরী/কামদেব

[৯]

বিয়ের পর থেকে দেবাযানীই গুঞ্জনকে সপ্তাহে একদিন স্নান করায়।অন্য দিন ভিজে গামছা দিয়ে গা-হাত-পা মুছিয়ে দেন। ঐ ভারী শরীর রোজ রোজ কি স্নান করানো সম্ভব।মনে পড়লো দুলু মেয়ে দেখতে গিয়ে জিজ্ঞেস করেছিল, আমার এক প্রতিবন্ধি বোন আছে আমার সঙ্গে তাকেও দেখা শোনা করতে হবে।পাত্র যাতে না ফসকে যায় সেজন্য না ভেবে চিন্তেই দেবযানী ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানিয়েছিলেন।এখন তার ঠেলা সামলাতে হচ্ছে। বুঝতে পারছেন দু-মণি বস্তা দেখাশোনা কি চারটিখানি কাজ?নাইটি তুলে গামছা দিয়ে রগড়াতে গিয়ে দেখেছেন রঙ যেন ফেটে পড়ছে।ননদের প্রতি তখন আর রাগ হয়না।ভগবান কেন যে ঠাকুর-ঝিকে এইশাস্তি দিলেন?নীরা যদি ঠাকুর-ঝির রঙের কণামাত্র পেত তাহলে আর বিয়ের জন্য চিন্তা করতে হত না। গুঞ্জনের গা মুছিয়ে এবার ওয়াকার থেকে চেয়ারে বসাতে হবে দেবযানী ছেলেকে ডাকলেন,সঞ্জু একবার এদিকে আয় তো বাবা।
সঞ্জয় আর দেবযানী ধরাধরি করে রাঙাপিসিকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে দিল। রাঙাপিসি বসতে বসতে জিজ্ঞেস করে,পলতু এতেচে?
দেবযানী ছেলের সঙ্গে চোখাচুখি করে মুচকি হাসলেন। লুলোটার সব দিকে খেয়াল আছে। ঘর থেকে বেরিয়ে জিজ্ঞেস করলেন দেবযানী,পল্টু এসেছিল?
--পল্টুদা না অনেক বদলে গেছে।চুপচাপ বেশি কথা বলেনা।নীরা বলল।
--ওর বাবা কতবড় ডাক্তার, দেখবি পল্টুও একদিন ডাক্তার হবে।চা করেছিস? আমাকে একটু চা দে।
দেবযানী নিজের ঘরে চলে গেলেন। নীরার মনে হল মা কথাটা তাকে শুনিয়ে বলল। মনে মনে বলে,ডাক্তার হল তো বয়ে গেল।
পল্টু বাড়ী ফিরতে মনোরমা ফ্রিজ থেকে সরবত এনে দিল।সরবতের গেলাসে চুমুক দিচ্ছে মমের হাত তার ঘাড়ে মাথায় ঘুর ঘুর করছে। বেশ মজা লাগে, পল্টু কি সেই আগের মত ছোটোটি আছে?অথচ মম এমন ব্যবহার করে ভীষণ লজ্জা করে আবার ভালও লাগে। সরবতের গেলাস শেষ করে মমকে জড়িয়ে ধরে কাধে মাথা রেখে জিজ্ঞেস করে,মম তুমি ঐ সোফায় বোসো।আমি তোমার কোলে মাথা রেখে বিশ্রাম করবো।
মনোরমা সোফায় বসে হেসে বললেন,তুই কোনো দিন বড় হবি না?
মমের কোলে মাথা রেখে ফিক ফিক করে হাসে পল্টু। একটূ আগে এমন ভাবে গায়ে হাত বোলাচ্ছিল যেন সে বাচ্চা ছেলে।আর এখন বলছে তুই কি বড় হবিনা।
--পরীক্ষা হয়ে গেলেই জয়েণ্টের ফরম দেবে।তুই একটু খেয়াল রাখিস।
এইবার অন্য মম। ছেলেকে স্বামীর মত ডাক্তার করতে হবে।কলিং বেল বাজে নীচে।
--ওঠ বাবা,মনে হচ্ছে মিতা এল।
--মম তুমি বোসো,আমি দরজা খুলে দিয়ে আসছি।
মম ঠিকই বলেছে মিতা মাসী এসেছে। মিতা উপরে আসতে মম চাবি দিয়ে বলল, আগে খাবার করো।
--কি করবো?
--স্যাণ্ডুইচ করো তিনজনের।তুমি যাও,আমি আসছি।
মিতা চলে যেতে মনোরমা বলল,তুই কি বেরোবি?
--কেন কোনো দরকার আছে?
--যদি বাইরে যাস তাহলে গোবিন্দ ষ্টোর্সে বলে আসবি লিষ্ট পাঠিয়েছি জিনিসগুলো তো পাঠালো না? মাখন একদম নেই।
বাড়ীতে মালপত্তর পাঠিয়ে দেয় সামান্য সার্ভিস চার্জের বিনিময়ে।গোবিন্দ ষ্টোরস বড় রাস্তার কাছে। পল্টু চা জলখাবার খেয়ে স্কুলের পোষাক বদলে বের হল। দোকানদারকে কিছু বলার আগেই বললেন,এখনই ডাক্তারবাবুর মাল যাচ্ছে।
সন্ধ্যে হয় নি কয়েক সপ্তা পর পরীক্ষা বাড়ীর দিকে পা বাড়ালাম।সামনের মোড়ে দলবল নিয়ে আড্ডা মারছে দিলীপ।ওকে দেখে অন্য পথ ধরলাম।এই রাস্তা দিয়েও পাড়ায় যাওয়া যায় একটু সময় বেশি লাগে। প্রান্তিকের পাশ দিয়ে বাঁক নিয়ে আমাদের পাড়ার রাস্তা।হাপাতে হাপাতে দিলীপ এসে বলল,কিরে পল্টূ আজ এই পথে? আমাকে দেখে ঘুর পথ ধরলি?
হেসে বললাম,তোর ভয়ে।
দিলীপ এরকম উত্তর আশা করেনি বলল,আমি কি সেই কথা বললাম?
--কোন পথ আমার পছন্দ সেটা কি তুই ঠিক করে দিবি?
--বুঝেছি আমরা খারাপ ছেলে তাই এড়িয়ে যেতে চাইছিস।দিলীপের গলায় হতাশা।
--ভাল হতে কে বাঁধা দিয়েছে?ভাল হলেই পারিস।
--সে তুই বুঝবি না।একদিন তোকে সব বলবো। মণিকা আণ্টি একদিন মেয়েকে লেলিয়ে দিয়েছিল আজ শালা দিলীপ খারাপ হয়ে গেল। বুঝিনা এখন বড় গাছে নাও বেধেছে--।
--দিলীপ এসব আমার ভাল লাগছে না।তাছাড়া আমি শুনে কি করবো তুই বল?
--ঠিকই অন্যের ঝামেলায় কেউ চায় না নিজেকে জড়াতে।দিলীপের কথায় অভিমানের ছোয়া।
--দিলীপ রাগ করিস না,আমি তোকে খারাপ ভাবি না। তুই পড়াশুনা ছাড়লি কেন বল?
--আজ তুই ব্যস্ত তোকে পরে একদিন সব বলবো।পল্টু তোর উপর আমার কোনো রাগ নেই।দিলীপ আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো।
দিলীপের সঙ্গে একটু রুঢ় ব্যবহার করেছি ভেবে খারাপ লাগলো।উপর থেকে দেখে মানুষকে চেনা যায় না ভিতরে কত ভাঙচুর চলছে।অন্য মনষ্ক ভাবে হেটে চলেছি। মুখ তুলে তাকাতে দেখলাম সামনে তিন তলায় ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে এক মহিলা আমার দিকে তাকিয়ে হাসছেন।মুখ ঘুরিয়ে নিলাম, পাগল নাকি?
ফ্লাটের নীচে আসতে শুনতে পেলাম ভদ্রমহিলা আমার নাম ধরে ডাকছেন। আমাকে চেনেন নাকি?
মুখ তুলে তাকাতে উনি ইশারা করলেন উপরে যেতে।দ্বিধায় পড়ে গেলাম উপরে যাওয়া কি ঠিক হবে? রাস্তাঘাটে লোকজন নেই,এই রাস্তায় লোক চলাচল কম। মুখ তুলে আবার উপরে তাকাতে চকিতে মনে পড়ল মিস অঞ্জু নয়তো?বছর দুই আগের কথা পিকনিকে দেখা হয়েছিল,এখনো নামটা মনে রেখেছেন?
সিড়ি ভেঙ্গে তিনতলায় উঠে দেখলাম দরজায় লেখা কে.এ.অঞ্জনা।কলিং বেলে চাপ দেবার আগেই দরজা খুলে গেল।এবার চিনতে অসুবিধে হল না,আসলে পিকনিকে সারাক্ষণ চোখে ছিল সানগ্লাস।
--এসো ভিতরে এসো।ফুলের মত হাসি দিয়ে আহবন জানালেন।
ভিতরে ঢুকতে দরজা বন্ধ করে দিয়ে সোফায় বসতে বলে বললেন,এক মিনিট আমি আসছি।
বেশ ছিমছাম পরিপাটি করে সাজানো,একপাশে টেবিলে ফোন। দেওয়ালে ঝোলানো কয়েকটি অয়েল পেণ্টিং।কিছুক্ষণ পর মিস অঞ্জু একটা কোল্ড ড্রিঙ্কসের বোতল নিয়ে ঢুকলেন।
--ভেবেছিলাম তুমি আসবে।আজ না দেখলে হয়তো কোনোদিন আসতে না তাই না?
বোতলটা হাতে নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,আপনি খাবেন না?
--আমি তো রোজই খাচ্ছি।কতকাল পরে এখানে বসে অন্য একজনকে দিলাম।
--একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?
--স্বচ্ছন্দে। তোমার যা ইচ্ছে তাই জিজ্ঞেস করতে পারো।
মিস অঞ্জু আমার সামনে বসলেন। কথাটা জিজ্ঞেস করা সমীচীন হবে কিনা ভাবতে ভাবতে বলেই ফেললাম,দরজায় লেখা কে এ অঞ্জনা--আপনার পুরো নাম কি?
--খাদিজা আক্তার অঞ্জনা।
খাদিজা যেন কোথায় শুনেছি এই মুহুর্তে মনে পড়ছে না কিন্তু সিওর নামটা আগে শুনেছি।মিস অঞ্জু জিজ্ঞেস করলেন,কি ভাবছো?
--না কিছু না মানে আপনার নামটা--।
খিলখিল হেসে উঠলেন,আমি জিজ্ঞেস করলাম,মিস অঞ্জু আমি কি বোকার মত কিছু বললাম?
--তা নয় তার আগে একটা কথা বলি তুমি আমাকে মিস মিস করবে না শুধু অঞ্জু বলবে।কেন হাসলাম জানো?নামটা তোমার শোনা শোনা লাগছে।স্বাভাবিক ইতিহাসে পড়েছো হয়তো --নবী হযরতের(স) প্রথম বিবির নাম খাদিজা বেগম।
--হ্যা-হ্যা ঠিক বলেছেন।
--এর অর্থ অপরিপক্ক।তোমার কোনো ভাল নাম নেই?একটাই নাম?
--স্কুলে আমার নাম অনঙ্গদেব সোম।
--অনঙ্গ মানে কি জানো?
--অঙ্গ নেই যার।
--মুলত পুরুষাঙ্গ বোঝানো হয়েছে।
আমি মাথা নীচু করি কি সব বলছেন অঞ্জু।
--তোমাকে ঘটনাটা বলি,রতিপতি কামদেব মহাদেবের ধ্যান ভঙ্গ করলে তিনি ক্রুদ্ধ হয়ে তাকে ভস্মীভুত করেন। তখন রতি মহাদেবকে তুষ্ট করলে তার স্বামীর অঙ্গটি ফিরিয়ে দেন।
--আপনি হিন্দু মাইথলজিও পড়েন?
অঞ্জনা উঠে পল্টূর পাশে এসে বসে বললেন,তোমাকে আমি যদি দেব বলি তোমার আপত্তি আছে?
--ঠিক আছে ইচ্ছে হলে দেবই বলবেন।
অঞ্জনা আচমকা আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন,আমরা তাহলে বন্ধু হলাম? জানো দেব কলেজ থেকে ফিরে এত একা লাগে দম বন্ধ হয়ে আসে।আজ আমার খুব ভাল লাগছে তোমাকে বন্ধু হিসেবে পেয়ে।তুমি কথা দাও মাঝে মাঝে আসবে।
--কদিন পর আমার পরীক্ষা।পরীক্ষার পর আসবো।
--আমাকে তোমার কেমন লেগেছে বলো?
--এক পলকের দেখায় খারাপ লাগেনি।তবে কি বাইরে থেকে দেখে মানুষকে বোঝা যায় না।
--তোমার স্পষ্ট কথা আমার ভাল লেগেছে।তোমার পরীক্ষা আমি তোমাকে আটকাবো না,তুমি কথা দিয়েছো পরীক্ষার পর মাঝে মাঝে বন্ধুর কাছে আসবে।
সত্যি কথা বলতে কি অঞ্জুকে খুব ভাল লেগেছে।কেমন সুন্দর কথা বলেন। মহিলার অনেক পড়াশুনা আছে কথা বললে বোঝা যায়।শিক্ষিত মানুষের সঙ্গে কথা বলেও মনের আরাম হয়।
6 years ago#13
Joined:09-09-2017Reputation:0
Posts: 302 Threads: 7
Points:2210Position:PV1

কোন কূলে যে ভীড়ল তরী/কামদেব


[১০]

কটাদিন যেন ঝড় বয়ে গেল,দিনরাত্রির হিসেব ছিল না।পরীক্ষা শেষ হওয়ায় স্বস্তি। এর মধ্যে একটা খারাপ খবর এল রমেনবাবুর ছেলে হীরু লাইনে গলা দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রাস্তা ঘাটে মাঝে মাঝেই দেখতাম হীরুকে,সেই হীরু আর নেই এই পাড়া এই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গেছে ভেবে মনটা খারাপ হয়ে গেল।কি এমন বয়স হয়েছিল? হীরু কেন এই পথ বেছে নিল?মানুষের জীবনের কোনো নিশ্চয়তা নেই।
লোক মুখে শোনা যাচ্ছে এবারের পিকনিকে রমেনবাবু নাকি মণিকা আণ্টিকে পুরানো কেল্লার কাছে কি সব করছিল জানাজানি হুওয়ায় লক্ষণদার কাছে কান ধরে ক্ষমাও চেয়ে নেন রমেনবাবু।কেউ কেউ লক্ষণদার কাজকে সমর্থন করেনি। তাদের বক্তব্য নির্জন কেল্লার কাছে কেন গেছিল মণিকা আণ্টি?ভাগ্যিস অঞ্জনার আপত্তিতে এবার আমি পিকনিকে যাইনি। পিকনিক হয়েছিল ডায়মণ্ড হারবারে। তপনদা মৌপিয়া বৌদিও গেছিল। সঞ্জয় বলছিল মৌপিয়া বৌদি নেশা করে নাকি নেচেছে। সারা পাড়ায় শোকের ছায়া। সবাই হাসপাতালে গেছে বডি আনতে।
অঞ্জনা এখন কলেজে,কখন ফিরবে কে জানে।যত দিন যাচ্ছে অঞ্জনার চেহারায় জেল্লা আসছে মানে আগের মত মনমরা ভাব নেই।রাস্তায় দিলীপের সঙ্গে দেখা, এবার আমার সঙ্গে আবার পরীক্ষা দিয়েছে।শুনেছি আর নেশা করেনা। দিলীপের এই পরিবর্তন ভাল লাগে।
--পল্টূ শুনেছিস তোর মণিকা আণ্টির কথা?শালা বেধবা মাগীর খাই গেল না। দিলীপকে বেশ খুশি মনে হল।
মণিকা আণ্টির উপর কেন এত ক্ষোভ বুঝতে পারি ওকে বললাম,দিলীপ পুরানোকে না ভুললে সামনের দিকে এগোতে পারবি না।
--বিশ্বাস কর আমি ওসব ভুলে গেছি।এই জন্যই এবার পিকনিকে যাইনি। পুরানো সব সঙ্গত ছেড়ে দিয়েছি।আরে বাবা ভাত ছড়ালে শালা কাকের অভাব হয় না। এমন ভাব করে যেন বলিউডি নায়িকা সাধনা।
মনের অন্ধকারে কোথায় যেন এখনো চাপা আছে লায়লি।কোনো কিছু মুছে যায় না, একটা ঘটনা চাপা দিতে পারে আর একটা ঘটনা।জিজ্ঞেস করি,পরীক্ষা কেমন হল?
--মোটামুটী,মনে হয় এবার পাস করে যাবো।
--মেশোমশায় কেমন আছে?
--শুড্ডাটার শরীর ভাল নেই। আচ্ছা পল্টু তুই একটা এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট করে দিতে পারবি তাহলে ড.সোমকে দেখাতাম।
অসহায় বোধ করি।কি করে বোঝাবো এ কাজ আমার পক্ষে কত অসম্ভব। দিলীপ অবাক হয়ে আমাকে দেখে বলে,ড.সোমের সঙ্গে বাড়ীতে তোর কথা হয় না?
হেসে বললাম,কথা হবে না কেন? শোন দিলীপ তুই মমের সঙ্গে কথা বল।
--তুই বাড়ী যাবিনা?
--ভাবছি একবার সঞ্জয়ের বাড়ী যাবো। মম বাড়ীতে আছে তুই যা না,মম তোকে তো চেনে।
--সঞ্জয় বাড়ী নেই ওর মামার বাড়ী গেছে।ঠিক আছে আমি মাসীমাকে একবার বলে দেখি।
দিলীপ চলে যেতে ভাবছি তাহলে কোথায় যাবো? প্রান্তিক অবধি ঘুরে ফিরে আসছি সঞ্জুদের বাড়ীর কাছে এসে উপরে তাকালাম,কেউ নেই বাড়ীতে সঞ্জু মামার বাড়ী গেছে।
--এ্যাই পত্তু এ্যাই পত্তু।বারান্দায় উকি দিচ্ছে রাঙা পিসির মুখ। উপলে আয়-উপলে আয়।
ঝনাৎ করে পায়ের কাছে পড়ল চাবির গোছা। রাঙা পিসি উপর থেকে ডাকছে কিলে থুনতে পাত্তিত না এ্যাই পত্তু উপলে আয়। আমি এদিক-ওদিক দেখলাম কেউ দেখছে কিনা।দুপুর বেলা সবাই দরজা বন্ধ করে শুয়ে পড়েছে। থাকবে পড়ে চাবির গোছা? কি ভেবে কুড়িয়ে নিয়ে উপরে উঠে গেলাম। দরজা খুলে বারান্দায় যেতে রাঙা পিসি বলল, দ্যাখ না থব থালা আমাকে ফেলে তলে গেতে।একতু থেলে ঘলে নিয়ে তল তো।
আমি চেয়ার ঠেলে রাঙা পিসির ঘরে নিয়ে গেলাম।চাবি রাঙা পিসির হাতে দিয়ে আসি বলার আগেই আমার জামা খিমছে ধরে বলল,এততু তিপে দিপিনা?
আমি জামার বোতাম খুলে রাঙা পিসির মাইগুলো টিপতে লাগলাম।
--কি থুক পত্তু কি থুক তোল ভাল লাকচে না?
--হ্যা ভাল লাগছে।দুহাতের করতলে মাই দুটো পিষ্ঠ করতে থাকি।রাঙা পিসি খপ করে আমার বাড়া চেপে ধরে বলল,এততু কোল কেউ নেই কোল না।বলতে বলতে নিজেই চেন টেনে বাড়াটা বের করে নিয়েছে। অবস্থা কোন দিকে যাচ্ছে বুঝতে পারছি না।
--পত্তু আমাকে ধলে খাতে বতিয়ে দেতো।চেয়ালে বতে আতি থেই ককন তেকে।
আমি রাঙা পিসির বগলের তলায় হাত দিয়ে অনেক কষ্টে ভারী শরীরটা খাটে তুলে দিতে রঙা পিসি বা-হাতে আমার জামা চেপে ধরে জামা হাটুর উপর তুলে বলল, দ্যাক দ্যাক বালো না?
আমি দেখলাম বালে ঢাকা রাঙা পিসির গুদ।বাল সরাতে নজরে পড়ল চেরা।উপরে লার্জ লিপ দু-আঙ্গুলে ফাক করতে বেরিয়ে পড়ে স্মল লিপ এক কোনায় তিরতির করে কাপছে টিয়া পাখির ঠোটের মত লাল টূকটুকে ভগাঙ্কুর আমি আলতোভাবে তর্জনী দিয়ে স্পর্শ করতে রাঙা পিসি ইহি-ইহি করে বলল, কি কলতিচ লে বোকা তোদা ইহি-ইহি।
কি ফর্সা রাঙা পিসি কালো মিশ মিশ করছে মৌচাকের মত এক থোকা বাল। লুলো ল্যাংড়া সবার চিতায় আগুণ জ্বলে।
--লক্কি চোনা পত্তু তোল ঐতা দোকা না এ্যাই বোকাতোদা।রাঙা পিসি অস্থির হয়ে বলল।
আমার বাড়া একেবারে শক্ত হয়ে গেছে।কান দিয়ে বেরোচ্ছে আগুণের হলকা। কপালে ঘাম জমেছে।রাঙা পিসি জামা চেপে ধরে আছে।চেরার ফাক দিয়ে চুইয়ে পড়ছে কামরস। বাড়াটা এগিয়ে গুদের কাছে নিয়ে যেতে জামা ছেড়ে রাঙা পিসি দু-হাতে আমাকে আকড়ে ধরে নিজের দিকে টানতে থাকে।চেরার মুখে লাগিয়ে মৃদু চাপ দিতে পিসি গুঙ্গিয়ে উঠল,দোলে দোলে পত্তু দোলে।
আমার খুব মায়া হল ইস বেচারির সব আছে অথচ তাকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। আমি রাঙা পিসির পাছা দু-হাতে চেপে ধরে পড় পড় করে বাড়াটা ভিতরে ভরে দিলাম। নরম তুলতুলে মাখনের মত মসৃনভাবে গেথে গেল বাড়া।
--উহুহু হু--পত্তু কি থুক লে কি থুক উই-উই-উইহি-ই-ই।
ইতিমধ্যে কামরসে গুদ পিচ্ছিল হয়ে ছিল বাড়ার ঘষায় ফচর-ফচর শব্দ হচ্ছে।
--উলি-উলি দোলে দোলে কি থুক কি থুক লে মাইলি পত্তু--থাম পি না থাম পি না।
কি মোতা তোল ঐতা।তুল ধলেছিস কেন?
--তুমি এদিকে দেখো না।রাঙাপিসি তোমার কষ্ট হচ্ছে নাতো?
--ধুল কত্ত হবে কেন খুপ ছুখ হচ্ছেরে--তুই দোলে দোলে কল-খুপ দোলে দোলে--।
উরুর নীচ থেকে সরু রাঙা পিসির শরীর।গাদনের চোটে সারা শরীর লাল টুকটুক করছে যেন রক্ত ফেটে বেরোবা।মাংসল শরীরের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করতে খুব ভাল লাগছে।একসময় সুতীব্র বেগে আমার বীর্যপাত হয়ে গেল।সদ্য কড়া থেকে নামানো গরম সুজির মত বীর্য যোণীর নরম চামড়ায় পড়তে সারা শরীরে খেলে গেল বিদ্যুৎ প্রবাহ।
--উলি পত্তু থাম্পি না থামপি না।উলি উলি উলি বলতে বলতে রাঙা পিসির শরীর জল খসিয়ে বিছানায় এলিয়ে পড়ল।ঘামে ভিজে সারা শরীর আমি তাকিয়ে দেখলাম রাঙা পিসি আমার দিকে অদ্ভুত বিহবল চোখ মেলে তাকিয়ে মিট মিট করে হাসছে।আমি চেয়ারটা খাটের কাছে নিয়ে রাঙা পিসিকে নামিয়ে চেয়ারে বসিয়ে দিলাম।একটা টুকরো কাগজ দিয়ে বাড়াটা মুছে চাবি রাঙা পিসির হাতে দিয়ে চলে আসবো রাঙাপিসি বলল, নাইতিতা কে পলাবে এ্যাই পত্তু?
নাইটি পরিয়ে দিলাম রাঙা পিসি বলল,তুই খুপ বালো।
দরজা টেনে সিড়ি দিয়ে নীচে নেমে এলাম।
রাস্তায় নেমে মনে হল এ আমি কি করলাম? একটা অসহায় মহিলার সুযোগ নিলাম? হীরুর বাবার থেকে কোথায় আমি আলাদা? উদ্দেশ্য হীন হাটতে হাটতে প্রান্তিকের সিড়ী বেয়ে উপরে উঠে দেখলাম,দরজা বন্ধ অঞ্জনা কলেজ থেকে ফেরেনি। এখন আমি কোথায় যাবো। অঞ্জনাকে সব বলতে পারলে হয়তো কিছুটা হালকা বোধ করতাম। সবাইকে সব কথা বলা যায় না। নিজের উপর খুব ঘেন্না হচ্ছে।অন্ধকারে নিজেকে লুকোতে পারলে ভাল হত।আকাশে জ্বল জ্বল করছে সুর্য। রাঙা পিসিই দায়ী ঐভাবে জোর না করলে আমি কি এরকম করতাম? এই যুক্তিতেও মনের গ্লানি কাটছে না।বাসায় ফিরে শুয়ে পড়লাম।মম জিজ্ঞেস করলো, অবেলায় শুয়ে পড়লি কি রে শরীর খারাপ?
--না এমনি।
--একটা ছেলে এসেছিল দিলীপ না কি নাম।
--দিলীপ।রাস্তায় আমার সঙ্গে দেখা হয়েছে।
--ওর বাবা খুব অসুস্থ,অনুর এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট চায়।
--পারলে দিয়ে দাও।
--সব ব্যাপারে নাক গলানো অনুচিত।
--বাপি কিছু বলেছে?
--অনু আমাকে বলবে?তা নয় আসলে দক্ষিণী মহিলা রাও না কি নাম---খুব বিরক্ত হয়।
--দিলিপের বাবা সত্যিই খুব অসুস্থ,এবার তুমি যা ভালো বোঝ করবে। তোমার ব্যাপারে আমি নাক গলাতে চাইনা।
মম হেসে বলল,তোকে আমি পেটে ধরেছিলাম ভুলে যাস না।সত্যি করে বলতো তুই ওকে বলিস নি আমার কথা?
--তুমি আমাকে একটু শুতে দেবে?ভাল্লাগে না সব সময় জেরা।
মনে মনে ভাবি মায়েদের এই অদ্ভুত ক্ষমতা ছেলেদের মনের কথাও তাদের অনবগত থাকে না।রাঙাপিসির আকুল আর্তি চোখের সামনে ভেসে উঠল।এটা জীবের স্বাভাবিক জৈবিক প্রবৃত্তি। 
6 years ago#14
Joined:09-09-2017Reputation:0
Posts: 302 Threads: 7
Points:2210Position:PV1

কোন কূলে যে ভীড়ল তরী/কামদেব

[১১]

হীরুর দেহ যখন পাড়ায় নিয়ে এল কাকীমা সন্তানের মৃত দেহ নিয়ে আছাড়ি পিছাড়ি অবস্থা। কিন্তু একবারের জন্যও উকি মেরে দেখলেন না রমেনবাবু। লক্ষণদা সম্পর্কে যে যাই বলুক এই একটা ব্যাপারে সত্যিই প্রশংসনীয় তার ভুমিকা।সেই সকাল থেকে নাওয়া নেই খাওয়া নেই হাসপাতালে পড়ে আছে এর পর শ্মশানে গিয়ে শেষকৃত্য করা কখন যে ছাড়া পাবে তার নিশ্চয়তা নেই। অথচ হীরু কোনোদিন পার্টি করতো না।বাপি ঠিকই বলে,মানুষকে বিচার করা সহজ কাজ নয়।পল্টু দেখলো সঞ্জয়ও এসেছে।ইচ্ছে করেই এড়িয়ে চলছিল।একসময় সঞ্জয় কাছে এসে বলল,ভেরি স্যাড তাই নারে পল্টূ?
পল্টু স্বস্তির শ্বাস ফেলে,রাঙা পিসির ব্যাপারটা কেউ বুঝতে পারেনি।
--তুই কখন আসলি?
--সন্ধ্যেবেলা ফিরেছি।বাবা অফিস থেকে যেতে দেরী না করলে আরো আগেই আসতাম।
লক্ষণদা তাগাদা দিলেন,দেরী করা যাবে না।রমেনদা কোথায়?নিজেই ঘরে ঢুকে রমেনবাবুকে বের করে আনলো।জবুথবু   মুখ করে এসে দাড়ালেন।ছেলের মৃত্যুতে নিশ্চয় কষ্ট পাচ্ছেন। 
মনোরমা ঘড়ি দেখলেন।অনুর আসার সময় হয়ে এল।কাল রবিবার একটু রাত হলে ক্ষতি নেই।সেণ্টার টেবিলে জল ঢাকা দিয়ে রাখলেন।পল্টু আসতেই বললেন, কিরে সারা দুপুর ঘুমোলি পড়াশুনা করতে হবে না?
মম বলার আগেই পল্টু জানতো কি বলবে মম। নিজের ঘরে গিয়ে বই নিয়ে বসে।
ফোন বেজে উঠতে ঐ আবার ফোন বলে রিসিভার তুলে হ্যালো বলতেই ফোন কেটে গেল।
--কে মম?
--কে জানে কোন বাদর হবে।সন্ধ্যেবেলা একবার ফোন করেছিল "হ্যালো" বললেই কেটে দিচ্ছে।
কিছুক্ষণ পর নীচে গাড়ীর শব্দ হতে মনোরমা দ্রুত নীচে নেমে গেলেন।কলিং বেল টেপার আগেই দরজা খুলে দিলেন। ড.সোম হেসে বললেন,মুখটা দেখেই মনটা শান্ত হয়ে গেল।
মনোরমা চার পাশ দেখে লাজুক হেসে বললেন,থাক হয়েছে।বয়স বাড়ছে না কমছে?
উপরে উঠে চেঞ্জ করে সোফায় বসলেন ড.সোম।মনোরমা কোলে বসে অনুর বুকে মাথা রাখলেন।তর্জনী দিয়ে বুকে দাগ কাটতে কাটতে জিজ্ঞেস করেন,তোমার কষ্ট হচ্ছে না তো?
--হলেও যতদিন বাঁচবো তোমাকে কোলে করেই রাখবো।
মনোরমা হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে বললেন,আবার সেই কথা?
--মনু তুমি কিন্তু আগের চেয়ে ভারী হয়েছো।
--ভারী না ছাই,বলো তুমি পারছো না।ঠিক আছে আমি উঠে যাচ্ছি।
ড.সোম গলা জড়িয়ে ধরে গালে গাল রেখে বললেন,অনু এইটুকুর জন্য বাইরে থাকলেও ভাবি কখন ঘরে ফিরবো।
--এ্যাই শোন তুমি পল্টুর সঙ্গে একটু কথা বলো।বেচারি তোমার সঙ্গে কথা বলতে চায় ভয়ে তোমার কাছে আসে না।
--আমাকে ভয় পায়?হো-হো-হো।
--হেসো না তো।আমি ওকে ডাকছি।
ফ্লাক্স থেকে চা ঢেলে ছেলেকে ডাকতে গেলেন মনোরমা।ড.সোম চায়ে চুমুক দিচ্ছেন। পল্টু ঢুকে জিজ্ঞেস করে,বাপি আমাকে ডেকেছেন?
--পরীক্ষা কেমন হলো?
--মোটামুটি।
--কি রকম মোটা খুব বেশি না মাঝামাঝি?
পল্টু বুঝতে পারে না কি বলবে।
মনোরমা ঢুকে বললেন,এ আবার কি রকম কথা? খুব ভালোও নয় খুব খারাপও নয়।একটু ভাল কথা বলতে পারো না?
--দাঁড়িয়ে রইলে কেন বোসো।খুব তাড়া নেই তো?
পল্টু সোফায় বসলো।
--জানো মনুভালো ভালো কথা আমাদের বেদ পুরাণে প্রাজ্ঞ জনেরা অনেক আগেই সব বলে গেছেন।
--তুমি আবার কখন পড়লে সেসব?সারাদিন তো রোগ আর রোগী নিয়েই ব্যস্ত থাকো।
ড.সোম মৃদু হাসলেন।একবার এক দানব সিদ্ধিলাভের জন্য কঠোর তপস্যা শুরু করলো।ছাত্রনাং অধ্যয়নম তপঃ--ছাত্রদের তপস্যা হচ্ছে অধ্যয়ন। তপস্যা ভঙ্গের জন্য হিংস্র জানোয়ার এল অপ্সরা কিন্নরী এল এবং ব্যর্থ মনোরথ হয়ে ফিরে গেল। সেই দানব কাম ক্রোধ লোভ সব কিছু ত্যাগ করে একনিষ্ঠভাবে সাধন করে চলেছে।কায়মনোবাক্যে সাধনা করলে সিদ্ধি সুনিশ্চিত।
অঞ্জনাও পুরাণের কথা বলছিল।বাপি ডাক্তার অথচ এইসব পড়েছেন।পল্টূ বাপিকে নিরস রসকষহীন বলে জানতো এতদিন।
--আমাদের নারীদের দুই রূপ--একাধারে সৃষ্টি এবং ধ্বংস।
--মায়েরা তো সর্বদা মঙ্গল ময়।পল্টু বলল।
--সব মায়েরাই জ্ঞানত সন্তানের মঙ্গল চায়। কখনো কখনো অজ্ঞানত অমঙ্গল ডেকে আনে।
--আমি আবার কি অমঙ্গল করলাম? মনোরমা প্রতিবাদ করেন।
--সব ব্যাপারে নিজেকে জড়াও কেন? এক মা যাতে অন্যান্য জা-এর ছেলেরা জানতে না পারে দরজা বন্ধ করে নিজের ছেলেকে ভাল-মন্দ খাওয়াছে।এ ঘটনা কি সংসারে বিরল?
মনোরমা হেসে ফেলে বলেন,আমার কোন জা নেই।
--ভেবে দেখেছো অজ্ঞাতসারে সেই স্নেহময়ী মা সন্তানকে একটী স্বার্থপর হিসেবে গড়ে তুলছেন।
পল্টু অবাক হয়ে শোনে ড.সোম এরকম কথা বলতে পারেন তার ধারণা ছিল না। মনোরমা বললেন,দ্যাখ তো পল্টু আমি কি খুব মুটিয়েছি?
পল্টু হেসে বলল,রোজ দেখলে বোঝা যায় না। মম তুমি মর্নিং ওয়াক করতে পারো।
অধ্যাপিকা অঞ্জনা কলেজ থেকে ফিরে আশা করে বসে ছিলেন কখন দেব আসে। দুবার ফোনও করেছিলেন কিন্তু মনে হল ফোন ধরেছিলেন দেবের মা।পাড়ার একটি ছেলে আত্মহত্যা করেছে।দেব এলে জানা যেতো কি ব্যাপার। অঞ্জনা লক্ষ্য করেছেন দেবের সঙ্গে কথা বললে নিজেকে খুব হালকা বোধ হয়। তার যা কিছু উপসর্গ নিঃসঙ্গতাই তার একমাত্র কারণ?ড.সোম ঠিকই বলেছেন। এই সব ভাবতে ভাবতে ঘরে বসে ছটফট করেন ।শেষ পর্যন্ত সেদিন দেবের সঙ্গে দেখা না করেই শুতে গেলেন অঞ্জনা।
ভোরবেলা কাগজ নিয়ে বসেছেন ডিসিপাল।দেবযানী রান্না ঘরে চা করতে করতে মেয়ের সঙ্গে পিকনিকের ব্যাপারে গল্প করছেন।দেবযানী জিজ্ঞেস করলেন,হীরু কি ওর বাবার ব্যাপারটা জানতো?
--আমি কি জানি?রমেনকাকু তো কেল্লার দিকে ছিলেন।
--কি ঘেন্না কি ঘেন্না।বাড়ীতে অসুস্থ বউ--।
--ওনার একটূ ছোকছোকানি বরাবর।সবিতা ফোড়ণ দিল।
কাজের মেয়ের এই ধরণের মন্তব্যে বিরক্ত হয়ে দেবযানী বললেন,তোমাকে এর মধ্যে কথা বলতে কে বলেছে?দাঁড়িয়ে কথা গেলা হচ্ছে?বাসন মাজা হয়েছে?
--বৌদি ঐ কথা বলবেন না।আমার অত টাইম নেই লোকের কথা গেলবো।জল নেই তাই বলতে এলাম।
--ঠিক আছে ঠিক আছে তুমি যাও।নীরা পাম্পটা চালিয়ে দেতো মা।
নীরা সুইচ টিপে ফিরে এসে বলল,জানো মা মৌপিয়া বৌদি যা নাচছিল না--হি-হি-হি।
--হাসিস নাতো।চা-টা তোর বাবাকে দিয়ে আয়।
নীরা বাবাকে চা দিয়ে ফিরে এলে দেবযানী জিজ্ঞেস করেন,তপন ছিল না?
--তপনদা থালা বাজিয়ে তাল দিচ্ছিল।আমি আর বরুণ তো হেসে গড়াগড়ী যাই আর কি।
বরুণের নাম আসতে দেবযানী বিরক্ত হয়ে বললেন,চা নিয়ে এখন যাও। সারাদিন খালি পরচর্চা।
মায়ের আকস্মিক পরিবর্তনে নীরা অবাক হয়ে চা নিয়ে নিজের ঘরে চলে গেল। কিছুদিন ধরে বরুণের কথা কানে আসছে দুলুকে বলতে হবে।চারদিকে যা সব হচ্ছে ভেবে চিন্তিত হন দেবযানী।                                                                                         
সবিতা বাসন মাজতে মাজতে ভাবছে,কিছু একটা হয়েছে।গিন্নীমাকে মনে হল লুলাটারে লইয়া চিন্তিত।ভগমানের কি খ্যাল মাগীটার জেবনটাই বরবাদ।কথাটা মৌপি বৌদির সাথে আলোচনা করতি হবে।বৌদির সাথে সব কথা হয়।মানুষটা ভারী সরল একা একা থাকে স্বামী বাইরে বাইরে থাকে বলে তার সঙ্গে দুটো রসের কথা বলে। উনার ঘরে কত যন্তরপাতি। একদিন চমকায়ে উঠেছিল একটা যন্তরে তার কথা তুলে রাখছে,শুনলে মনে হবে সেই কথা বলছে।কি যেনি নাম টেপ রেডার না কি? সবিতা এ বাড়ীর কাজ সেরে বলল,আমি আসছি বৌদি।
--আচ্ছা এসো হ্যা শোন বাথরুমটা ভাল করে ঝাট দিয়েছো তো? এ বাড়ীর কথা ও বাড়ীতে লাগাতে যেও না।
--শোনেন বৌদি সবিতাকে এসব বলবেন না।অবস্থার বিপাকে লোকের বাড়ী কাজ করি কিন্তু কেউ বলতি পারবে না নন্দীবৌদি ঘরে নাচ করে কি করে না বাড়ী বাড়ী  সবিতা বলে বেড়িয়েছে?
ডাল সম্বরা দিয়ে জল ঢেলে দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছেন দেবযানী। রমেনবাবু কি চুদছিল?সরাসরি জিজ্ঞেস করা যায় না মেয়েকে?ঐ বিধবা মাগীর সায় ছিল না বললেই হবে? রমেনবাবুর প্রতি বিরুপতা ধীরে ধীরে কাটতে থাকে। বউটা অসুস্থ বেচারি কি করবে।
নিজের ঘরেই দেখছে না,যত বয়স বাড়ছে তত ঘন হচ্ছে রস।কাল রাতে কিইনা করেছে।উফ,এখনো সারা শরীর টন টন করছে।বলে কিনা দেবী তোমার গুদ ঢিলে হয়ে গেছে।হবে না,কে করেছে?তিন-তিনটে বাচ্চা বের করেছে এই গুদ দিয়ে। অবাক লেগেছিল দুলুর অদ্ভুত আব্দারে।গুদ ঢিলে তাই পিছনে ঢোকাবে?মাগো কি ঘেন্না কি ঘেন্না।

কলিং বেল বাজতে অঞ্জনা দ্রুত দরজা খুলতে যায় নিশ্চয়ই তার বন্ধু এসেছে। দরজা খুলে মনে হল দেব খুব চিন্তিত।জিজ্ঞেস করলো,কাল আসোনি কেন?
--কোথায় থাকো এসে দেখলাম দরজা বন্ধ।
--দরজা বন্ধ?তুমি কাল এসেছিলে?কখন বলতো?
--দুপুর বেলা।
--বাঃ তখন কি করে থাকবো?আমার কলেজ আছে না?
--দরকার কি তোমার সময় বুঝে আসবে?
--তুমি আগে বললে কলেজ যেতাম না।কাজকম্মো ছেড়ে দিয়ে কি বাড়ী বসে থাকবো? কি দরকার বলছিলে বলো।
পল্টু মনে মনে ভাবে অঞ্জনাকে বলবে কিনা?মনের অবস্থা কালকের মত নেই এখন। যা হবার হয়ে গেছে তা নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে আর ইচ্ছে হয় না।পল্টু বলল,একটু চা-টা দেবে?
মুচকি হেসে অঞ্জনা চা করতে চলে গেল।অঞ্জনার ভাল লাগে এই সংসার কোনো বাধাবাধি নেই কেবল মনের টানে পরস্পর কাছাকাছি আসা।কিছুক্ষণ পরে দু-কাপ চা নিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলো,কি দরকার ছিল বললে না তো?
--সন্ধ্যের আকাশে যে চাঁদ ওঠে দিনের আকাশে কি তাকে আর দেখা যায়? পল্টু মজা করে বলল।
--সেই দরকার এখন মিলিয়ে গেছে?পড়াশুনা কেমন চলছে?
--বাড়িতে মমের তাগাদায় অতিষ্ঠ হয়ে এখানে এলাম।এখানেও সেই পড়াশুনা?
ঝর্ণার মত হেসে উঠলো অঞ্জনা।একসময় হাসি থামিয়ে কি ভেবে বলল,শোনো দেব তোমায় একটা কথা বলি।প্রত্যেক মেয়ের মধ্যে একটা কুঠূরি থাকে সেখানে একজন মা বাস করে।
--তা হলে বিয়ে করলেই পারো।
--বিয়ে না করলে কি মা হওয়া যায় না?
অঞ্জনার কথায় বিস্মিত চোখ তুলে তাকায়,কি বলতে চায় অঞ্জনা? আমতা আমতা করে বলে,তার মানে?
--বোকা ছেলে তুমি যা ভাবছো তা নয়।আশপাশের দুনিয়া কম দেখলাম না,সে সুযোগ নেবার প্রবৃত্তি  হয়নি কোনোদিন।এই ভাল আছি।
--তুমি সহজভাবে কথা বলতে পারো না?পল্টু বিরক্ত হয়ে বলল।
--বিষয় যেখানে জটিল তাকে সহজভাবে বলতে গেলে আরো জটিলতর হওয়ার আশঙ্কা।
--চিরকাল একা একাই কাটিয়ে দেবে?
অঞ্জনা এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরে বলল,আমি আর এখন একা নই দেব।
অঞ্জনার বাহু বন্ধনে বিগলিত হয়ে বলল পল্টু,কেন জানি না তোমার কাছে আসলে আমার খুব ভাললাগে।
পল্টুর গালে গাল রেখে অঞ্জনা বলল,আমারও খুব ভাল লাগে দেব। তারপর মুখটা ম্লান হয়ে যায় মৃদুস্বরে বলেন, তাই তো সব সময় ভয় হয় হারিয়ে ফেলবো না তো?
পল্টু হেসে বলল,আমি কি বাচ্চা ছেলে হারিয়ে যাবো?
--বাচ্চা হলে চিন্তা ছিল না,খুজে বের করতাম।
পল্টু একটু অবাক হয় কি বলতে চায় অঞ্জনা?মুখ ঘুরিয়ে ওড়না দিয়ে চোখ মোছে অঞ্জনা।
6 years ago#15
Joined:09-09-2017Reputation:0
Posts: 302 Threads: 7
Points:2210Position:PV1

কোন কূলে যে ভীড়ল তরী/কামদেব


 [১২]



দিন দশেক পরের কথা।অফিস থেকে ফিরে মণিকা দেখল দরজা বন্ধ ভিতরে কেউ আছে বলে মনে হল না। গেল কই মেয়েটা?ব্যাগ থেকে চাবি বের করে দরজা খুলল ব্যাগটা ছুড়ে দিল খাটের উপর।শাড়ী বদলাতে গিয়ে কি ভেবে শাড়ী না বদলিয়েই চা করতে রান্না ঘরে ঢুকল।
বয়স তো কম হইল না বুড়া ধাড়ীমেয়ে মা খেটে খুটে আইল কোথায় এক কাপ চা করে এগিয়ে দিবো তা না সন্ধ্যে বেলা উনি চরতে বাইর হইলেন।আসুক আজ বাড়ী--কিছু না বলতে বলতে বড় বাড় হইছে।সারাদিন কি হাড়ভাঙ্গা খাটনিই না করতেছে মেয়েটার জন্য।অথচ লোকে তাকে নিয়ে কত কিই না ভাবতেছে।বেচারি রমেনবাবু এই বয়সে পোলা হারিয়ে একেবারে ভেঙ্গে পড়েছেন।একা একা কি করবে হাটতে হাটতে কেল্লার দিকে যাচ্ছিল। কেউ তাকে চুপি চুপি অনুসরণ করছে বুঝতে পারলে কি যেতো। কিছুই করেনি পিছন থেকে আচমকা ঝাপিয়ে পড়ে পাছা টিপে ধরেছিল অথচ তাই নিয়ে কত গল্প,কাজকাম নাই মানুষ পারেও বটে। খুব খারাপ লেগেছিল লক্ষণবাবু উনারে কান ধরতে বলায়।তার পাছা টিপছে তোদের এত গায়ে জ্বালা কেন রে? বাধা দিতে পারেনি তাতে লোকের সন্দেহ আরো বাড়তো।মণিকা চায়ের কাপ শেষ করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে নিজের পাছা দেখে।রমেনবাবুর পাছার দিকে খুব নজর ভেবে মৃদু হাসি খেলে যায়। ঘড়ির দিকে চোখ পড়তে চমকে উঠল,আটটা বাজতে চলল মেয়ের এখনো পাত্তা নেই।আর চুপ করে থাকা যায় না। প্রথমেই মনে পড়লো দিলিপের কথা।মাথায় চিরুণী বুলিয়ে দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে পড়লো মণিকা।কি করবে কোথায় খুজবে দিশাহারা বোধ করে।শীলাদির বাড়ীতে একবার খোজ নেবে নাকি? ছেলেকে নিয়ে শীলাদির খুব দুশ্চিন্তা ছিল। এবার সেই কারণে পিকনিকেও যায় নি।আরে ঐ মোড়ে কে দাঁড়িয়ে দিলীপ না? তাহলে লায়লি কি ফিরে এসছে? কাছাকাছি গিয়ে মণিকা অন্যদিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল। কি জিজ্ঞেস করবে দিলীপকে ভেবে পায় না।ভাবছে বাড়ী ফিরে দেখবে নাকি লায়লি ফিরেছে কিনা? দিলীপ এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলো, আন্টি কাউকে খুজছেন?
--উম ন না,তুমি এইখানে কতক্ষণ?
--বিকেল থেকে পল্টুর সঙ্গে গল্প করছিলাম।ও একটূ আগে চলে গেল।কেন?
--লায়লি দোকানে আসছিল বাড়ী গেল কিনা বুঝতে পারতেছি না।
লায়লির নাম শুনে দিলীপের মন বিরুপ হয় বলে, আমি আসছি আণ্টি।
মণিকার সন্দেহ হয় দিলীপ কি ঠিক কথা বলছে? বাড়ী গিয়ে যদি দেখে লায়লি ফেরেনি তাহলে কি করবে? পল্টুর সঙ্গে দেখা হলে জানা যেতো সত্যিই সে দিলিপের সঙ্গে গল্প করছিল কিনা?লক্ষণের সাথে দেখা হইলে তারে বলা যাইত। লায়লির বাপে মারা যাওনের পর সেই বুদ্ধি দিছিল বাড়ীটা প্রোমোটাররে দিতে, একলগে কিছু টাকা পাওয়া গেছিল আর একতলায় এই ফ্লাট।
সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে অঞ্জনার কথাটা নিয়ে নাড়াচাড়া করে পল্টূ।" দেব আমি অগ্নি সাক্ষী বা কলমা পড়ার বন্ধনে বিশ্বাস করিনা।" কি বলতে চায় অঞ্জনা,গেট টূগেদার? পল্টু রাস্তায় নেমে কিছুদুর যেতে মনে হল কে যেন ডাকছে।পিছন ফিরে দেখল মণিকা আণ্টি তাকেই ডাকছে।কাছে এসে বলল,ফল্টু তুমার কি আজ দিলীপের সাথে দেখা হইছিল?
--হ্যা কেন বলুন তো?
--ন না মানে তুমারে বলতে বাধা নাই এত রাত হইল লায়লি অখনো ফিরে নাই।কই যে গেল?
পল্টু ব্যাপারটা বুঝতে পারে,দিলীপকে সন্দেহ করছে আণ্টি। আগের মত নেই দিলীপ অনেক বদলে গেছে।
--দেখুন আণ্টি আপনি দিলীপকে মিথ্যে সন্দেহ করছেন।
--আমার মাথার ঠিক নাই।কই যে গেল মেয়েটা?
--দেখুন এতক্ষণে বাসায় ফিরে এসেছে হয়তো।পল্টু বলল।
--হইতে পারে।আসলে মায়ের মন তো যাই দেখি হয়তো মিছাই চিন্তা করতেছি।
বাড়ি ফিরে দরজা বন্ধ দেখে ফুপিয়ে কেদে ফেলে মণিকা।দরজা খুলে বিছানায় উপুড় হয়ে ফুস ফুস করে কাদতে থাকে।মনে হচ্ছে কেউ দরজা খোলার চেষ্টা করছে। চোখের জল মুছে আই হোলে চোখ রেখে মাথা গরম হয়ে যায়। পিছন ফিরে ঘড়ী দেখে সাড়ে নটা বাজতে চলেছে। লায়লি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করতেই মণিকা বলল,এইটা ভদ্র লোকের বাড়ী।
--ভদ্র লোক আসলো কোথা থেকে?দুজনেই আমরা মেয়ে।লায়লি মজা করে বলল।
--কই ছিলি এত রাইত অবধি?তর লজ্জা করে না?
--তুমার জন্য আমার লজ্জা করে।
--কি কইলি যত বড় মুখ না তত বড় কথা? কি লজ্জার কাম করছি? বল বল তরে কইতে হবে।
--কটা বলবো? এখন আমার কথা বলতে ভাল লাগছে না।লায়লি বাথরুমে দরজা বন্ধ করে,ছিটকিনি নষ্ট হয়ে গেছে বলে বালতিটা দরজায় ঠেকিয়ে রাখে।
মণিকা মনে মনে ফুসতে থাকে কি বলতে চায় লায়লি?ক্রোধে আত্মবিস্মৃতি ঘটে দরজায় ধাক্কা দিতে দরজা খুলে গেল মণিকা বলল,তুই কি কইলি আমি--।কথা আটকে যায় লায়লি উলঙ্গ হয়ে শাওয়ারের তলায় দাঁড়িয়ে,উদ্ধত স্তন নির্লোম বস্তি দেশ।
মণিকার মাথায় আগুণ জ্বলে উঠল বলল,তুই বাল কামাইছিস?
--হ্যা, আমার ভাল লাগে না,অস্বস্তি হয়।লায়লি গোজ হয়ে বলে।
--হ,মুখখান খুইল্যা রাখছো?
--মুখ সামলে কথা বলবে।তাহলে আমাকেও মুখ খুলতে হবে।
মণিকা হায় হায় করে ওঠে,কার সঙ্গে কথা বলছে একী তার মেয়ে যাকে পেটে ধরেছিল? মাকে ভয় দেখায়?
--মুখ খুলতে আর বাকী রাখছো কি?এই বয়সে এত কুটকুটানি?
উলঙ্গ অবস্থায় লায়লি বাথরুম থেকে বেরিয়ে মায়ের ব্যাগ ঘেটে একটা মলিন বই বের করে মণিকাকে দেখিয়ে বলল, বিধবা হয়ে এইসব বই পড়তে তোমার লজ্জা করে না?
মণিকা কিং কর্তব্য বিমুঢ় কয়েক মুহুর্ত।উলঙ্গ লায়লিকে দেখে সারা শরীরে শিহরিত হয়।এত বড় হইয়া গ্যাছে তার মাইয়া? নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,ঐটা কি বই?আমার ব্যাগে কে ঢূকাইল?
--কামদেবের লেখা চোদাচুদির বই তোমার ব্যাগে ভুতে ঢুকিয়েছে।
--ভুতে না কে ঢূকাইছে আমি জানি।বুঝছি মায়েরে ফাসাইতে চাস?হায় ভগবান এই মাইয়া আমি প্যাটে ধরছিলাম। মণিকা মেঝেতে বসে পড়ে ডূকরে কেদে ফেলে।
মাকে এই অবস্থায় দেখে লায়লির মনের আগুণ ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে আসে। এগিয়ে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে তুলে দাড় করিয়ে বলে, মা আমার ভুল হয়েছে, আমি আর বলব না।
--সত্য কইরা বল তুই কই গেছিলি?মণিকা কান্না জড়িত গলায় জিজ্ঞেস করে।
--সিনেমায় গেছিলাম।
--কার লগে,পয়সা পাইলি কই?
--বিল্টূ দেখিয়েছে।জানো মা বিল্টু আমাকে বাইকে করে নিয়ে গেছিল।কি স্পীডে চালায় যেন উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছিল।
--শোন মা আমি তর থিকা বড় অনেক দেখছি।অরা প্রেত্থমে উড়ায় শ্যাষে ধপাস কইরা ফেলাইয়া দেয়।
--তোমার মেয়েকে অত বোকা ভেবোনা।
--হইছে,অখন গা মুইছ্যা জামা কাপড় পর।উদলা ভাল দেখায় না।

ডিসি পাল প্রতিদিনের মত দেবযানীকে চিত করে চুদে তারপর পাশ ফিরে শুয়ে পড়ল।দেবযানী উঠে বাথরুমে গিয়ে গুদ ধুয়ে এসে স্বামীর পাশে শুয়ে পড়ে কিন্তু তার চোখে ঘুম নেই।কিছুক্ষণ পর পাশ ফিরে দুলুকে জিজ্ঞেস করে,তুমি ঘুমালে নাকি?
--আবার কি হল?তন্দ্রাচ্ছন্ন ডিসি জিজ্ঞেস করে।
--তুমি ঠাকুর-ঝিকে একবার ডাক্তার দেখাও।
--তার আবার কি হল?
--না কিছু হয় নি।এ মাসে ঠাকুর-ঝির মাসিক হয় নি।
--হয়নি তাহলে হবে।এখন ঘুমাও।
--আর কবে হবে?একবার ডাক্তার দেখাতে কি হয়েছে?
ডিসি পাল ঘুরে শুয়ে বউকে জিজ্ঞেস করে,তোমার কি হল বলতো? মাঝ রাতে গুঞ্জনকে নিয়ে পড়লে?
--তুমি বুঝবে না।নীরা কি করে কার সঙ্গে মেশে কোনো খবর রাখো?কদিন আগে ঠাকুর-ঝির গা মোছাতে গিয়ে দেখলাম বাল জট পাকিয়ে আছে উরুতে কি সব লেগে আছে।
--কি লেগে আছে?বিরক্ত ডীসি পাল জিজ্ঞেস করে।
--তোমাদের যা বের হয় শুকিয়ে গেলে যেমন লাগে সেই রকম।
ডিসি পাল ড্যাবডেবিয়ে বউয়ের দিকে তাকিয়ে থাকে।বিরক্তি নিয়ে বলে,ছিঃ দেবী ছিঃ তুমি শেষ পর্যন্ত--। 
--তোমার একবার ডাক্তার দেখাতে কি হয়েছে?দেবযানী বলল।
--দাড়াতে পারে না হাটতে পারে না ওকে ডাক্তার দেখানো--ঝামেলা কি কম?ঠিক আছে আমি ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলব নিয়ে যেতে বললে নিয়ে যাবো।এখন ঘুমাও।
6 years ago#16
Joined:09-09-2017Reputation:0
Posts: 302 Threads: 7
Points:2210Position:PV1

কোন কূলে যে ভীড়ল তরী/কামদেব

[১৩]


সবিতা যত বাড়ী কাজ করে তার মধ্যে একেবারে শেষে যায় নন্দীবৌদির বাড়ী। এই বাড়ীতেই সে বেশি সময় কাটায়।বৌদি মানুষটারে তার খুব ভাল লাগে।ভাল মন্দ খেতে দেয়।গান বাজিয়ে হাফ-পেন্ট পরে যখন নাচে দেখে ভারী আনন্দ হয়। এই বয়সে তারও নাচতে ইচ্ছে হয়। তার সঙ্গে কত কথা বলে কখনো ঝি বলে মনে করে না।পাল বাড়ীতে বৌদির নাচের কথা নিয়ে আলোচনা হয় শুনে রেগে বলেছিল,ওর মেয়ে সারাক্ষণ পিকনিকে বরুণের সাথে ঘুর ঘুর করছিল। সবিতা বলল,বৌদি কেউ নিজের দোষ দেখে না খালি অন্যের খুত ধরে।বললে অনেক  কথা বলতে পারি কিন্তু সবিতা অত টাইম নেই এর কথা ওরে লাগায়। সবিতা গলা নামিয়ে ফিস ফিস করে বলল,জানো বৌদি পালবাবুর বুন লুলাটার কি জানি--।
কথা শেষ না হতে মৌপিয়া ধমক দিল,চুপ করো। আমার সামনে এভাবে কথা বলবে না।ভদ্রমহিলা সম্পর্কে এভাবে বলতে তোমার খারাপ লাগে না?ওনার নাম নেই,ছিঃ সবিতা ছিঃ?
সবিতা একটা মুখরোচক সংবাদ দিয়ে বাহবা নিতে চেয়েছিল,এমন ব্যবহার প্রত্যাশা করেনি।কি খারাপ কথা বলল সবিতা ভেবে পায় না তবু বৌদির মন রাখতে বলল,ছ্যরি বৌদি আমার ভুল হয়ে গেছে আর হবে না।
সবিতার মুখে ইংরেজি শুনে কষ্টে হাসি দমন করে বলল,বক বক করছো, তোমার বাসন মাজা হয়েছে?
--হ্যা বাসন মাজা ঘর মোছা সব শেষ। বৌদি একটা সিনেমা চালাবে?
মৌপিয়া হেসে জিজ্ঞেস করে,তোমার সব বাড়ির কাজ শেষ হয়েছে?
--তুমার বাড়ী আমি শেষে আসি।আর কিছু করতে হবে?
--খুব নেশা হয়ে যাচ্ছে।মৌপিয়া ডিভিডিতে একটা কার্টুন ফিলম চালিয়ে দিয়ে বলল, আমি বাথরুমে যাচ্ছি তুমি চলে গেলে দরজা টেনে দিয়ে যাবে।
মিকি মাউজের কার্টুন হচ্ছে,সবিতা দেখতে দেখতে হেসে গড়িয়ে পড়ে।ইন্দুরটা ভারী শয়তান,ঐটুক ইন্দুর তার কি বুদ্ধি।
সেদিনের ঘটনার পর মণিকা বিল্টু সম্পর্কে ভাল করে খোজ খবর নেওয়া শুরু করলো মাইয়া গুলা বোঝেনা বিনাইয়া বিনাইয়া একটূ মন রাখা ভাল কথা বললে গইল্যা আলহাদে চিত হইয়া পড়ে।বিল্টুরা এইখানে পুরানো বাসিন্দা নিজেদের বাড়ী। বাজারে ষ্টেশনারী দোকান আছে।ল্যাখা পড়া মেট্রিক অবধি পড়ছে।এমনি খারাপ না তবে এক বিধবা বোন ওদের সঙ্গে থাকে।বাপে বুড়া হইছে অখন বিল্টূই দোকানে বসে।ফিতা কিনতে গিয়া লায়লির লগে আলাপ শ্যাষে সিনেমা দেখা দেখি।
এখন ক্লাস নেই অধ্যাপকদের ঘরে বসে আছেন মিস অঞ্জনা।মিসেস কেবি মানে কণিকা ব্যানার্জি জিজ্ঞেস করলেন,কি ব্যাপার খুব চিন্তিত মনে হচ্ছে?
মিসেস অঞ্জনা চোখ তুলে হাসলেন। কেবি বললেন, ভালই আছেন আপনি কোনো দায়-দায়িত্ব নেই।আগে জানলে বিয়েই করতাম না।
--খারাপ লাগলে তালাক দিয়ে দিন,বাঁধা কোথায়?
মিসেস কেবি এমন উত্তর প্রত্যাশা করেন নি।তার মনে হল তার কথায় অঞ্জনা কি আহত হলেন?
--আমি ঠিক ওভাবে বলতে চাইনি।এই দেখুন না সকালে অফিসের ভাত ছেলেকে কলেজে রওনা করিয়ে দিয়ে তারপর কোনো রকমে নাকে মুখে গুজে কলেজে এলাম।আপনার ওসব ঝঞ্ঝাট নেই।
অঞ্জনা কি করে বোঝাবে তার ঝঞ্ঝাট কম নয়।দেবের জন্য সারাক্ষণ চিন্তা ঠিকমত পড়ছে কিনা অথচ পাশে পাশে থেকে দেখাশুনা করবে তার উপায় নেই। বাইরে থেকে সব বোঝা যায় না দেবের কথাটা মনে পড়ল।বেশ পাকা পাকা কথা বললে কি হবে মনটা একেবারে কাঁচা।ড.সোমের সঙ্গে কোনো মিল নেই। ড.সোম মনের দিক থেকে অত্যন্ত সবল অথচ দেব একেবারে অন্য রকম যে কেউ অনায়াসে ওকে ফাঁদে ফেলতে পারে।সেইজন্য খুব চিন্তা হয়। ড.সোম হার্টের ডাক্তার হলেও রোগীকে সমগ্রভাবে দেখেন।বলতে নেই এখন ভাল আছেন তার পরামর্শে।এতদিন ভালই ছিলেন এখন সব সময় দেবের জন্য ভয় হয় তাকে হারাবে নাতো? আল্লাহ যখন মুখ তুলে চেয়েছে আবার বিমুখ হবে নাতো?দেবকে হারালে খাদিজা আক্তার তাহলে বাঁচবে না।
--দেখুন কণিকাদি সমস্যা বিহীন নির্ঝঞ্ঝাট জীবন বড়ই দুর্বহ।যদি সেদিন আসে তাহলে বুঝতে পারবেন মর্মে মর্মে।একসময় আমি বুঝেছি।
--একসময় বুঝেছেন?তার মানে এখন সমস্যা আছে?
অঞ্জনা মুখ নীচু করে হাসেন।
--কি ব্যাপার অঞ্জনা রোমান্সের গন্ধ পাচ্ছি মনে হয়।আপনার চেহারায় কিন্তু একটা জেল্লা এসেছে।
ঘণ্টা বাজতে অঞ্জনা উঠে পড়লেন। কণিকাদি বললেন,আমাদের একটু ভাগ দেবেন।
অঞ্জনা হেসে বলল,স্যরি আমি এ ব্যাপারে খুব সংকীর্ণমনা ভাগ দিতে পারবো না।
অঞ্জনার মনে দেবের মুখটা ভেসে উঠল।প্রায় আঠারো-উনিশ বছরের ছোট হবে।পুচকে বর নিয়ে সুখ স্বপ্ন দেখে খাদিজা আক্তার।
প্রতিদিনের মত অফিস যাবার জন্য তৈরী ডিসিপাল।অফিস বেরোবার আগে ডিসি পাল বললেন,লোক আসবে ঐ শিশিটা দিয়ে দিও। আমি ফেরার পথে ডাক্তারখানা হয়ে আসবো।
--পেচ্ছাপ তো খুব পরিষ্কার।ভগবান করুণ যেন খারাপ কিছু না হয়।দেবযানী কাছে এসে ফিসফিসিয়ে বলল।
সঞ্জয় এসে বলল,মা আমি একটু বেরোচ্ছি।
--এখন আবার কোথায় চললি? জয়েণ্টে বসবি তার জন্য কি পড়াশুনা করতে হয় না?
--ভাল্লাগে না,সব সময় খিচ খিচ।
--আচ্ছা সঞ্জু ঐ দামড়া লোকটার সঙ্গে তোর এত মাখামাখি কেন বলতো।
--মা লক্ষণদা সম্পর্কে একটু ভদ্রভাবে কথা বোলো।উনি তোমাদের কত সম্মান করে জানো?
দেবযানী মনে মনে ভাবেন সবাই সম্মান করে আর ছেলেমেয়েরাই সেই সম্মান ডোবাবে।
ফোন বাজছে মম বাথরুমে পল্টু বই রেখে ফোন ধরে।গলাটা শুনলেও ভাল লাগে পল্টু বলল, পড়ছিলাম....তোমার ক্লাস নেই...ঠিক আছে আমি যাবো তুমিই তো বেশিক্ষণ বসতে দাও না...ও বুঝেছি পাস না করলে আর সম্পর্ক রাখবে না....তুমি না বললেও আমি বুঝি...আমাকে এত বোকা ভেবো না....বাথরুমে...আচ্ছা রাখছি।
পল্টু ফোন রেখে ভাবে অঞ্জনা তার পরীক্ষা নিয়ে এত চিন্তা করছে কেন? পাস করুক ফেল করুক তাতে ওর কি?সন্ধ্যেবেলা দেখা করতে বলেছে,বললেই যেতে হবে? বাপি বলেছিল নারী একাধারে সৃষ্টি আবার বিনাশ। রাঙা পিসির ব্যাপারটা কেউ বুঝতে পারে নি।কটাদিন কি ভয়ে ভয়ে কেটেছে। অঞ্জনা জানতে পারলে হয়তো তাকে ঘেন্না করবে।
রান্না ঘরে শব্দ পাওয়া যাচ্ছে,মনে হয় মিতা মাসী এসে গেছে।মম এক গেলাস হরলিক্স নিয়ে ঢুকে ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন,বাবা হরলিকস খেয়ে একটু ঘুরে আয়,তাহলে ভাল লাগবে।
পল্টূও তাই ভাবছিল মায়েরা ছেলের মনের কথা বুঝতে পারে। মমকে জড়িয়ে ধরে পল্টু বলল,মম তুমি কাকে বেশি ভালবাসো-আমাকে না বাপিকে?
--তোর একথা কেন মনে হল?
পল্টু হেসে বলল,এমনি। তুমি রাগ করলে?
মনোরমা হেসে ফেলে বললেন,বোকার মত কথা।যে আমাকে এমন সুন্দর ছেলে দিয়েছে তাকে ভালবাসবো না?
পল্টুর মনে হয়েছিল মমকে জটিল ধাঁধায় ফেলে দিয়েছে।মম সেখান থেকে কি সুন্দর বেরিয়ে এল,পল্টুর মনে পড়ে মম একসময় স্কুলের শিক্ষিকা ছিল। মেটারনিটি লিভ নেবার পর আর ফিরে যায়নি চাকরিতে।ঘুরতে ঘুরতে প্রান্তিকের কাছে এসে পল্টুর অঞ্জনার কথা মনে এল।যাবে কি যাবেনা ভাবতে ভাবতে উঠে পড়ল তিনতলায়।কলিং বেল টিপবে না ফিরে যাবে? ভাবতে না ভাবতেই খুলে গেল দরজা।পল্টু ভিতরে ঢুকে একটা সোফায় বসলো। কিছুক্ষণ পর এক গেলাস পাণীয় নিয়ে এসে অঞ্জনা দেবের দিকে এগিয়ে দিল।
--কি এটা?
--বোর্ণভিটা।
--কি মনে করো আমাকে?আমি কি ছেলেমানুষ?
--তোমাকে কে বলল,এটা শুধু ছেলেমানুষরা খায়?
--আমি বাড়ী থেকে হরলিকস খেয়ে বেরিয়েছি।
--তা হলে চা করি?
--তোমাকে করতে হবে না,আমি করছি।
অঞ্জনা বুঝতে পারে কোনো কারণে মনটা বিরুপ,বাধা দিল না।
পল্টু রান্না ঘরে গিয়ে চা করতে শুরু করে।এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে আগে মত আড়ষ্ট ভাব নেই।অঞ্জনা চুপ করে বসে থাকে সোফায়, কিছু বলতে গেলে অশান্তি করতে পারে।দেব তার উপর জুলুম করে সেটা ভাল লাগে।
দু-কাপ চা নিয়ে এসে এককাপ অঞ্জনাকে দিল।অঞ্জনা চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে মুখ বেকায়।
--কি হল ভাল হয় নি?জিজ্ঞেস করে পল্টু।
--সুন্দর হয়েছে তবে চিনি কম।
পল্টু অঞ্জনার হাত থেকে কাপ নিয়ে চুমুক দিয়ে বলল,ইস চিনি দিতে ভুলে গেছি। দাড়াও চিনি নিয়ে আসছি।
অঞ্জনার চুমুক দেওয়া চায়ে দেব চুমুক দিয়েছে বিষয়টা তার নজর এড়ায় না।মনে মনে খুব তৃপ্তি বোধ করে।ওর মনটা খুব ভাল,দেবের কর্তালিভাবকে প্রশ্রয় দেয় খাদিজা।বকাবকি করলে ভালো লাগে।চামচে চিনি এনে চায়ে মিশিয়ে কিছুক্ষন নেড়ে চুমুক দিয়ে দেখল মিষ্টি হয়েছে কিনা।তারপর কাপ এগিয়ে দিল।
অঞ্জনা লক্ষ্য করে নিজে চুমুক দিয়ে তাকে দিল।বেশ তৃপ্তি নিয়ে চুমুক দেয় অঞ্জনা।
অফিস থেকে ফিরে নিজের ঘরে গুম হয়ে বসে থাকেন ডিসি পাল।দেবযানী স্বামীকে চা দিয়ে জিজ্ঞেস করে,কি গো ডাক্তারখানায় গেছিলে?
--বাল জট পাকিয়ে গেছে তুমি তো আগে আমাকে বলো নি?
--সব কথা সব সময় খেয়াল থাকে নাকি?ডাক্তার কি বললো?
--এ্যাবরশন করাতে হবে।
--ও মা! তাহলে যা ভেবেছি তাই? হে ভগবান এ তুমি কি সর্বনাশ করলে? এখন মুখ দেখাবো কি করে?
--আঃ চুপ করো।লোক জানাজানি না করলে হচ্ছে না?
ডিসি পাল চা শেষ করে বলল,গুঞ্জন কি করছে?চলো তো দেখি কি বলে ও?
হুইল চেয়ারে বসে আছে রাঙা পিসি।ডিসি পাল সরাসরি জিজ্ঞেস করে,কিরে এই অবস্থা তোর কে করেছে?
রাঙা পিসি ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকে।ডিসি পাল গাল চেপে জিজ্ঞেস করে,কি রে বল?
ফিক করে হেসে রাঙা পিসি বলল,থুক খুপ থুক।
--সুখ রঞ্জন?ডিসি পালের ভ্রু কুচকে যায়।
--ঠিক করে বলো ঠাকুর-ঝি,পল্টু করেছে?
রাঙা পিসি ঘাড় নেড়ে নেড়ে বলতে থাকে,হুম...হুম।...থুক..খুপ থুক।
ডিসি পাল চেয়ারে ঝাকুনি জিজ্ঞেস করে,গুঞ্জন সত্যি করে বল পল্টু না সুখ রঞ্জন?
গুঞ্জন ভয় পেয়ে ভ্যাক করে কেঁদে ফেলে বলল,বেত কলেচি বেত কলেচি ঘাড়  নাড়তে নাড়তে বলল,থুক ...থুক।
ডিসি পাল হতাশ হয়ে নিজের ঘরে এসে বসল।দেবযানী এসে জিজ্ঞেস করে,তুমি বিশ্বাস করো আমার ভাই করেছে?
--দোহাই একটূ চুপ করো।আমি কিছুই বিশ্বাস করছি না।
--আমি সুখকে বলে দেবো কোনোদিন যেন এ বাড়িতে না আসে।মনে করবি তোর দিদি নেই।
--এখন বলে আর কি হবে?যা হবার তাতো হয়ে গেছে।
--তার মানে তুমি বলছো ঠাকুর-ঝির এই অবস্থার জন্য দায়ী সুখ?
--আমি কি তাই বলেছি?তুমিই তো গোলমাল পাকাচ্ছো।
--আমি গোলমাল পাকালাম? সময়মতো না বললে একদিন ছানা বেরিয়ে 'মামা-মামা' করতো।
--তোমার কি একটু দয়া মায়া থাকতে নেই?অসহায় ভাবে বলল ডিসিপাল।
--ওদের আসার সময় হয়ে গেছে এসব না ভেবে কি করে খালাস করা যায় এখন সেই ব্যবস্থা করো।ও তোমাকে বলিনি দাড়াও।
দেবযানী বাইরে থেকে একটা খবর কাগজেরর পাতা নিয়ে এসে স্বামীর হাতে দিল।কাগজে শুকিয়ে আছে বীর্য। ডিসিপালের নজরে পড়ে তারিখের দিকে। তারপর দেবযানীর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,পচিশ তারিখের কাগজ খুজছিলাম তুমি বলেছিলে সুখ নিয়ে গেছে?
--হ্যা তাতে কি হয়েছে?
ডিসিপাল অশান্তির ভয়ে বলল না যে এই কাগজটা পচিশ তারিখের।
দেবযানীর মন খচ খচ করে দুলু কি তার ভাইকে সন্দেহ করছে?
6 years ago#17
Joined:09-09-2017Reputation:0
Posts: 302 Threads: 7
Points:2210Position:PV1

কোন কূলে যে ভীড়ল তরী/কামদেব


[১৪]



খবর পেয়ে বড়দি দোলন ছোড়দি ঝুলন এসেছে। ডিসি পাল অফিস যায় নি। ভাইয়ের কাছে সব শুনে দোলন বলল,ছিঃ-ছিঃ পোড়ার মুখি আমাদের বংশের মুখে চুনকালি দিলি?।এত বয়স হল কই আমাদের দিকে কেউ আঙ্গুল তুলতে পারবে?
--আঃ বড়দি এখন এসব কথা তুলে কি হবে?গুঞ্জনের কি করবে সেইটা ভাবো। ঝুলন বিরক্ত হয়।
--পুলিশে খবর দিয়েছিস? তদন্ত করলে কান টানলে দেখবি মাথা বেরিয়ে আসবে।
কথাটা শুনে দেবযানীর বুকের মধ্যে ছ্যৎ করে ওঠে।সুখকে নিয়ে টানাটানি হবে নাতো?
নিজের শালকের কথা ভেবে ডিসি পাল বলল,মাথা আসবে কি না জানি না কিন্তু আমাদের মাথা হেট হবে।
--হ্যাঁ থানা-পুলিশ না করাই ভালো।সায় দিল দেবযানী।
ঝুলন জিজ্ঞেস করল,সুখকে দেখছি না ওকে খবর দিস নি?
ডিসি পাল চোখ তুলে দেবযানীকে দেখে।
--দুলু তোর কি সাজেশন?ঝুলন জিজ্ঞেস করে।
দেবযানী উঠে গিয়ে সবিতাকে দেখে জিজ্ঞেস করে,তোমার বাসন মাজা হয়েছে?
--হ্যা এইবার ঘর মুছবো।সবিতা বলল।
--আজ আর ঘর মুছতে হবে না,এখন যাও।
ডিসি পাল একটু ভেবে বলল,দিদির বাড়ী বেড়াতে নিয়ে যাবার কথা বলে নার্সিং হোমে নিয়ে অপারেশন করিয়ে বড়দির ওখানে কদিন রেখে তারপর বাড়ীতে নিয়ে আসবো।
--তুই ক্ষেপেছিস?আমার মেয়েরা বড় হয়েছে শেষে বাপের বাড়ীর কীর্তি শ্বশুর বাড়ীতে জানাজানি হলে মুখ দেখাতে পারবো?দোলন ফুসে ওঠে।
ডিসিপাল অসহায় বোধ করে।দেবযানী কি বলতে যাচ্ছিল কিন্তু দুলুর মুখের দিকে তাকিয়ে চুপ করে গেল।
ঝুলন জিজ্ঞেস করল,কদিনের জন্য রাখতে হবে?
--কদিন আর অপারেশনের পর তিন-চারদিন বিশ্রাম করা দরকার।
--আছা চারদিন আমি রাখবো।দুলু তুই কিন্তু চারদিনের পর নিয়ে আসবি।
--সব কিছু অত কড়াকড়ি করলে হয় না।একটু সুস্থ হলেই নিয়ে আসবে।আগে থেকে কি করে বলবে?দোলন বলল।
--তুমি থামো বড়দি আমার ব্যাপার আমাকে ভাবতে দাও।দেবী তুমি বাড়ীতে থাকো একটু নজর রাখলে এরকম হত না।
--দিদি আমি তো সারাক্ষণ নজরে রাখি স্নান করানো খাওয়ানো আমিই সব করি।
দোলন বলল,তাহলেও গাফিলতি হয়েছে।এসব কাজে একটু সময় লাগে চোখের পলকে একজন ইয়ে করে দিয়ে চলে গেল তা কি সম্ভব? তুমি তো জানো একটু সময় লাগে না?
লজ্জায় দেবযানী তাকাতে পারে না চা নিয়ে আসার ছুতো করে উঠে গেল।ঝুলন জিজ্ঞেস করে, দুলু সঞ্জুকে দেখছি না,ওর তো এখন ছুটি।
--জয়েণ্টে বসছে।আজ পরীক্ষা।
--নীরা তো সামনের বছর পরীক্ষা দেবে?পড়াশুনা করেতো ?আজকালর ছেলে মেয়ারা যা হয়েছে।
--বড়দি শুভ কি করছে?ঝুলন জিজ্ঞেস করে।
--অনার্স নিয়ে পড়ছে।ওকে বলেছিলাম জয়েণ্টে বসতে,ওর আবার ওসব পছন্দ নয়। শিক্ষার লাইনে থাকতে চায়।
ডিসি পাল বিরক্ত হয় এখন শিরে সংক্রান্তি আর এরা মেতেছে খোশ গল্পে। এমনভাব করছে গুঞ্জনের দায় যেন তার একার।বড় বড় কথা বাবা সময়মতো বিয়ে দিয়ে গেছেন সুখে কাটাচ্ছে দাম্পত্যজীবন।বিষয়টা কেউ গুঞ্জনের দিক থাকে ভাবছে না।ডিসি পালের মন ছোটো বোনটার জন্য কেদে উঠল।ঘর থেকে বেরিয়ে গুঞ্জনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করে,বড়দি মেজদি এসেছে--কথা বলবি?
--ওলা পাদি--ওলা পাদি।গুঞ্জন ঘাড় নাড়তে থাকে।
ডিসিপালের চোখে জল চলে আসে বলে,ছিঃ বড়দের ওরকম বলে না।
--তুই বালো পত্তু বালো।
পল্টু এসে ওকে চেয়ার থেকে ওয়াকারে তুলে দিত।কখনো চেয়ার ঠেলে বারান্দায় নিয়ে যেতো,কি ভেবে জিজ্ঞেস করে,সুখ রঞ্জন?
--থুক বালো।
ডিসিপাল ধন্দ্বে পড়ে যায়।পল্টু এরকম করবে বিশ্বাস হয় না,সুখ নিরীহ প্রকৃতি তাহলে কে হতে পারে? এমন কেউ হতে পারে যে সবার অগোচরে বাড়ীতে এসেছিল?দরজায় লক থাকে তা কি করে সম্ভব? যেই করুক একদিক দিয়ে ভাবলে গুঞ্জনের এই দিকটাও চিরকাল অনাস্বাদিত থাকলো না। কাগজে লেগে থাকা বীর্য পরীক্ষা করলে আসল লোককে ধরা অসুবিধে হত না কিন্তু তাতে কলঙ্ক মোচন হোতো কি?বরং জানাজানি হয়ে কেলেঙ্কারীর একশেষ।দেবীকে বলতে হবে সে যেন আগ বাড়িয়ে সুখকে কিছু বলতে না যায়। নীরার সঙ্গে  বেশি মেশামিশি দেখে পল্টুকে ভাইফোটা দেবার কথা বলেছিল।খুশি হুয়েই ফোটা নিতে সম্মত হয়েছিল,অস্বীকার করতেও পারতো।ছেলেটা খুব সরল।এত বড় ডাক্তারের ছেলে অথচ সে জন্য মনে কোনো দম্ভ নেই।
পরীক্ষা খারাপ হয়নি।পরীক্ষার হল থেকে বেরিয়ে পল্টু অবাক। উল্টোদিকের ফুটপাথে একটা বাড়ীর নীচে দাঁড়িয়ে হাত নাড়ছে অঞ্জনা।অঞ্জনা এখানে কলেজ যায়নি?কাছে যেতে জিজ্ঞেস করে,কেমন হল?
পল্টুর মুখটা ব্যাজার হয়ে যায় তাতে তোমার কি বাপু? বাড়ীতে গেলে মমও এই প্রশ্ন করবে।পল্টু দায়সারা গোছের উত্তর দিল,মোটামুটী।
--কিছু খাবে?
সত্যিই বেশ ক্ষিধে পেয়েছিল চারদিক তাকিয়ে দেখল একটা লোক শশা বিক্রি করছে, পল্টু জিজ্ঞেস করল,কিছু এনেছো?
অঞ্জনা পল্টুকে নিয়ে একটা চাইনিজ রেষ্টুরেণ্টে ঢুকলো।কেবিনে ঢুকে উল্টোদিকে চেয়ারে বসতে যাচ্ছিল অঞ্জনা বলল,আমার পাশে বোসো।বেয়ারা আসতে অঞ্জনা একটা প্রন চাউমিন আর চিলি চিকেনের ফরমাস দিল।পল্টু জিজ্ঞেস করে,তুমি খাবে না?
--আমি বেলায় খেয়েছি।তুমি কোন সকালে খেয়ে বেরিয়েছো।খাওয়া হলে একসঙ্গে কফি খাবো।
বেয়ারা খাবার দিয়ে গেল।সুন্দর গন্ধ বেরিয়েছে।জিভে জল এসে গেল।চামচ আর কাটা চামচ নিয়ে পল্টু খেতে শুরু করে।অঞ্জনা মমতামাখা দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। কিছুক্ষণ পর খেয়াল হয় পাশে অঞ্জনা বসে আছে সেদিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, তুমি একদম খাবে না?
--বলছি তো আরেক দিন খাবো।
পল্টু কাটা চামচে খানিকটা তুলে বলল,একটু খাও।
--ন না আমার ক্ষিধে নেই।
চামচ মুখের কাছে নিয়ে পীড়াপিড়ি করে ,একবার অঞ্জু একবার।
অগত্যা অঞ্জনা হা-করে।পল্টু মুখের মধ্যে চামচ পুরে দিল। তারপর এক টুকরো মাংস কাটায় বিধে বলল,আর এইটা আমি বলছি।
অঞ্জনা বাধ্য হয়ে টুকরোটা জিভ দিয়ে টেনে নিল।পল্টু অত্যন্ত পরিপাটি করে চাওমিন খেয়ে চলেছে।কোনোদিকে মন নেই।নিজের এটো চামচ অবলীলায় তার মুখে পুরে দিল আবার সেই চামচ দিয়ে নিঃসঙ্কোচে খেয়ে চলেছে।বিস্ময় বিমূঢ় চোখে চেয়ে থাকে অঞ্জনা।এত বছরের অভিজ্ঞতার সঙ্গে কিছুই মিলছে না, পিকনিকে দেখেছে এমন কি কলেজে শিক্ষিত মানুষদের সঙ্গেও মিশেছে যত উদারই হোক কিছুটা স্বাতন্ত্র লক্ষ্য করেছে সব ক্ষেত্রে।পল্টুর খাওয়া শেষ মুখ তুলে অঞ্জনার দিকে তাকিয়ে হেসে বলল, দারুণ করেছে তাই না?
--তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?অঞ্জনা বলল।
পল্টু লজ্জা পেল,তার অঞ্জনাকে আরেকটু দেওয়া উচিত ছিল।
অঞ্জনা জিজ্ঞেস করল,তুমি যে আমার এটো খেলে কেউ যদি জানতে পারে?
--কি করে জানবে কেউ কি দেখেছে?
--ও,কেউ দেখলে খেতে না?
--বাঃ আমি একাই খেয়েছি নাকি?তুমিও তো আমার এটো খেয়েছো।পল্টু হেসে জবাব দেয়।
কি কথার কি উত্তর? কাকে কি বলছে অঞ্জনা মনে মনে ভাবে।পল্টূ বলল,এবার আমি একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?
--কি জিজ্ঞেস করবে?
--আমার এটো চামচ দিয়ে তোমাকে দিয়েছি বলে তুমি রাগ করেছো?আচ্ছা বাবা স্যরি।
অঞ্জনা প্রশ্ন শুনে মনে মনে ভাবে দেব কি বোকা নাকি সরল? অঞ্জনা কি বলতে চাইছে দেব কি বুঝতে পারছে না?অঞ্জনা স্পষ্ট করে জিজ্ঞেস করে,শোনো দেব আমি একজন মুসলিম।
পল্টু হতবাক ঘাড় ঘুরিয়ে অঞ্জনাকে দেখে।বিরক্ত হয়ে বলে,আচ্ছা তুমি কি সহজভাবে কথা বলতে পারো না? মাঝে মাঝে তুমি কি বলো আমি বুঝতে পারিনা।
অঞ্জনাও উষ্ণস্বরে বলে,আমি মুসলিম তুমি বুঝতে পারো না?
--না পারি না।তুমি না বললে কোনোদিন বুঝতে পারতাম না।আমি ড.সোমের ছেলে পরিচয়ে নয় নিজের পরিচয়ে বাঁচতে চাই।তোমার ভাষা ব্যবহার শিক্ষা মানসিকতা তোমার পরিচয় তোমার আইডেণ্টিটি।অন্য কিছুর কোনো গুরুত্ব অন্তত আমার কাছে নেই।
অঞ্জনা বুকের মধ্যে অদ্ভুত অনুভুতি চোখে জল আসার উপক্রম। বেয়ারা কফি দিয়ে গেল,সঙ্গে বিল।পল্টু বিল নিয়ে মনযোগ দিয়ে দেখে দাঁড়িয়ে পকেটে হাত ঢুকিয়ে বলল,দেখি এত টাকা আছে কিনা?
--তোমাকে ওসব নিয়ে ভাবতে হবে না।অঞ্জনা পল্টুর হাত থেকে বিলটা নিয়ে নিল।
অঞ্জনা নীরবে কফিতে চুমুক দেয়।কত বয়স বড়জোর বাইশ-তেইশ কি সহজভাবে গভীর বিশ্বাসের সাথে কথাগুলো বলল দেব।
--অঞ্জনা তোমার কাছে জানতে ইচ্ছে হয় আমি যদি কোনোদিন নাম বদলে তোমার কাছে আসি তুমি কি আমাকে অস্বীকার করবে?দরদভরা গলায় জিজ্ঞেস করে পল্টু।
অঞ্জনা কফির কাপ থেকে চোখ তোলে না পাছে পাছে দেব দেখে ফেলে জল জমেছে চোখের কোলে।বেয়ারাকে বিল মিটিয়ে টিপস দিয়ে উঠে দাড়িয়ে বলল অঞ্জনা,এখন চলো।খালি আজেবাজে প্রশ্ন।
সঞ্জয় বাড়ী ফিরতে দেবযানী জিজ্ঞেস করে, কিরে কেমন হল?
--যা পেরেছি লিখে দিয়েছি।রেজাল্ট বেরোলে বুঝতে পারবে।
জামা প্যাণ্ট বদলে রাঙা পিসির ঘর খালি দেখে জিজ্ঞেস করে, রাঙা পিসি কোথায় ,ঘরে নেই তো?
--তোর পিসিরা এসেছিল,মেজদি ওকে নিয়ে গেছে।দেবযানী বলল।
সঞ্জয় মায়ের দিকে তাকিয়ে বুঝতে চেষ্টা করে তারপর জিজ্ঞেস করে,মেজোপিসির ওখানে থাকবে? যাবার আগে একবার দেখা হল না?
--আবার ফিরে আসবে,দুদিনের জন্য বেড়াতে গেছে। ঐ ঝামেলা কেউ রাখে নাকি?
--কি ঝামেলা করলো?তুমি ঝামেলা বলছো কেন?
--কুটোটিও নাড়োনা খাওয়ানো চান করানো সব আমাকেই করতে হয়। মুখে মুখে দরদ দেখানো সহজ।
সঞ্জয় প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলে,আসতে না আসতে শুরু করলে।চা-টা দেবে?
দেবযানী স্বস্তির শ্বাস ফেলে।
6 years ago#18
Joined:09-09-2017Reputation:0
Posts: 302 Threads: 7
Points:2210Position:PV1

কোন কূলে যে ভীড়ল তরী/কামদেব


[১৫]



দুর্যোগ যখন আসে জানান নাদিয়ে নিঃশব্দ চরণে।নির্বিচারে নির্মমভাবে তছনছ করে দিয়ে যায় সব। মুহুর্তকাল আগেও কেউ ঘুণাক্ষরে পায় না আভাস।পল্টু রেষ্টুরেণ্ট থেকে বেরিয়ে ভাবছে অফিস থেকে ফেরার সময় এখন বাসে উঠে জায়গা পাওয়া অসম্ভব।দাঁড়িয়ে যাবে কিন্তু অঞ্জনা?কানে এল ডাকছে অঞ্জনা, এ্যাই দেব এদিকে এসো।
ডাক অনুসরণ করে নজরে পড়ে একটা ট্যাক্সির ভিতর থেকে মুখ বের করে হাত নেড়ে তাকেই ডাকছে অঞ্জনা।দ্রুত গিয়ে দরজা খুলে উঠে বসলো।
--এখন বাসে উঠতে পারবে?
--তুমি না থাকলে আমি ঠিক ঠেলেঠুলে উঠে পড়তাম।কতলোক যাচ্ছে না?
জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকে পল্টু।একসময় অঞ্জনার দিকে তাকিয়ে বলল, চাওমিনটা বেশ তাই না?
অঞ্জনা হেসে বলল,তুমি আগে কখনো খাওনি?
--খেয়েছি বাড়ীতে মিতামাসী করে কিন্তু এরকম না। আমার বাপি বলেন,প্লেন লিভিং হাই থিঙ্কিং।এখন অধ্যয়নের কাল।বিলাসিতা নয় কৃচ্ছ সাধনের মাধ্যমে জীবনকে চিনতে বুঝতে এবং গড়তে সাহায্য করে।
অঞ্জনার মনে পড়ল ড.সোমের কথা।প্রথম দিকে মনে হয়েছিল ভদ্রলোক অত্যন্ত রুঢ়ভাষী দাম্ভিক।পরে ভুল ভেঙ্গেছে। উনি হার্টের ডাক্তার হলেও মানুষকে দেখেন সামগ্রীকভাবে।শরীরে প্রতিটী অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পরস্পর সম্পর্কিত,কোনোটি স্বতন্ত্র নয়।সুতরাং বিচার করতে হলে আনুসঙ্গিক দিক গূলোর কথা ভুলে গেলে যথার্থ ওষুধ নির্বাচন অসম্ভব।অঞ্জনা দেবের হাত তুলে নিল।
সন্ধ্যেবেলা কাজ থাকে না।সবিতা সময় পেলে বৌদির বাড়ী যায় ভিডিও দেখতে। দরজা খুলে দিল মৌপিয়া,সবিতাকে দেখে একটূ বিরক্ত।শরীরটা তার ভাল নেই। সবিতা ঢুকে টিভির সামনে মেঝতে গিয়ে বসলো।মৌপিয়া বলল,এখন টিভি চালাবো না,আমার মাথাটা ধরেছে।
সবিতা জিজ্ঞেস করলো,বৌদি মাথা টিপে দেবো?
মৌপিয়ার মনের বিরুপতা কেটে যায়।উঠে একটা কার্টুন ফিলম চালিয়ে দিয়ে বলল, ভিডিও দেখতে দেখতে মাথাটা টিপে দে।সবিতা ইতস্তত করছে দেখে বলল,তুই খাটে উঠে বোস।
সবিতা খুব খুশি,খাটে উঠে বৌদির মাথা টিপতে শুরু করে।নেংটি ইন্দুরটারে তাড়া করছে বিড়ালটা সেদিকে তাকিয়ে সবিতা বলল,বৌদি আপনে তো আমারে বকলেন শুধু শুধু আমি মিথ্যা বলি নাই।গরীবের কথা বাসি হইলে মিঠা হয়।
--আমি কখন বকলাম? কোন কথা বলছিস?
--আপনে কাউরে বলবেন না,লুলাটা সত্যিই পেকনেট হয়েছে।
মৌপিয়া তড়াক করে উঠে বসে বলে,আবার লুলা?আমি তোকে বলিনি লুলা বলবি না।
--তা না বললাম কিন্তু টেক্সি করে কোথায় নিয়ে গেল আপনে বলেন?
মৌপিয়া এতক্ষণে বুঝতে পারে সবিতা কি বলছে।জিজ্ঞেস করে,প্রেগন্যাণ্ট?সঞ্জুর পিসি প্রেগন্যাণ্ট তুই কি করে জানলি?কি করে হল?
--কারো ঘরের কথা অন্যেরে বলা সবিতার অপছন্দ। কিন্তু আপনের কথা আলাদা। পালবাবুর শালা আর ডাক্তারের বেটায় মিলা করছে।
--চুপ কর আমার ভাল লাগছে না। চুপচাপ বসে ভিডিও দেখ।মৌপিয়া আবার শুয়ে পড়ল।দুজনে মিলে মানে?ঝি-চাকরদের সঙ্গে এসব নিয়ে কথা বলা ঠিক নয় কৌতুহল দমন করে।
ট্যাক্সিতে বসে খাদিজা গুন গুন করে,সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে, ছুন্নত করলে হয় মুসলমান নারীর তবে কিসে প্রমাণ….।মনে মনে হাসে খাদিজা সত্যিই তো সে যে মুসলমান কি করে বুঝবে। পাড়ায় ঢোকার মুখে অঞ্জনা বলল, ড্রাইভার সাহেব এখানে দাড় করান।দেবের হাত ছেড়ে দিল।
ট্যাক্সি দাড়ালে পল্টুকে বলল,দেব এখানে নেমে যাও।
--তুমি নামবে না?
অঞ্জনা বিরক্ত হয়ে ট্যাক্সি হতে নেমে ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে বলল,তুমি চলে যাও।
--তুমি কোথায় যাবে?
--বোঝো না কেন কেউ দেখলে খারাপ ভাবতে পারে।
--ভাবুক যার যা খুশি।পল্টু জিদ ধরে।
অঞ্জনা রেগে গিয়ে বলল,তুমি আমার কথা শুনবে না?
পল্টু অবাক হয়ে অঞ্জনাকে দেখে।বেশ তো ছিল এর মধ্যে কি এমন হল?তারপর হাটতে শুরু করে।প্রান্তিক ছাড়িয়ে বাড়ীর কাছে এসে পড়ল। কয়েকজন লোক বাড়ীর সামনে ঘোরাঘুরি করছে। পল্টুকে তারা অদ্ভুত চোখে দেখছে কিন্তু কেউ কিছু বলল না।বাড়ীতে ঢুকতে মিতা মাসী বলল,দাদাবাবু তুমি এখন আসলা? ডাক্তারবাবু নাই।
কি বলছে মিতামাসী? পল্টু জিজ্ঞেস করে, বাপি কোথায়?
--মামাবাবু আনতে গেছে।মিতামাসী ফুপিয়ে কেদে ফেলে।
পল্টুর মনে হল চারদিক থেকে এক শূণ্যতা ধীরে ধীরে তাকে গ্রাস করছে। মুহুর্তে পৃথিবীটা যেন বদলে গেল। সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে বাপির ঘরে উকি দিল।বাপি যে সোফাটায় বসতেন সেটি আকড়ে ধরে মেঝেতে বসে আছে মম। পল্টুকে দেখে ব্যস্ত হয়ে মিতাকে ডেকে বলল,ওকে খেতে দাও।
--আমার ক্ষিধে নেই আমি খেয়েছি।
--পল্টু তুই চিন্তা করিস না,আমি তো আছি।মনোরমা বলল।
চোখে জল নেই কি সব বলছে মম?মাথা খারাপ হয়ে গেল নাকি?নীচু হয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে পল্টূ বলল, মম তুমি এরকম করছো কেন?
--বাবা দেখতো তোর মামা এলো কিনা?সেই কখন গেছে?
প্রতিদিন খুব গল্পগুজব হতো তা নয় কিন্তু অনুভব করতো প্রতিমুহুর্ত বাপির উপস্থিতি। বাপি নেই ভাবতে পারে না পল্টু। মমের অদ্ভুত আচরণ আরো যন্ত্রণা দেয়।এর থেকে মম যদি হাউ-হাউ করে কাদতো এতো খারাপ লাগতো না।রাত প্রায় দশটা ড.সোমের গাড়ী এসে পৌছালো,গাড়ীতে ড.সোমের বদলে দেবব্রত সেনগুপ্ত এবং মিসেস রাও।মিশনারী সন্ন্যাসিনীর মত লাগছে মিসেস রাওকে। পিছনে কাঁচের গাড়ীতে শায়িত ড.সোম।খবর পেয়ে মনোরমা নেমে এল। কাঁচের গাড়ীর কাছে গিয়ে অভিমানী দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ড.সোমের মুখের দিকে।
পাড়ার প্রায় সবাই এসেছে।দিলীপকে দেখা গেল ভীড়ের মধ্যে। অঞ্জনাও ছিল একটু দূরে।মৌপিয়া লুঙ্গি পরে এসেছে তাকে দেখে কেউ কেউ বিরক্ত। দেবব্রত এগিয়ে গিয়ে মনোরমাকে বললেন,মনো চল।
দাদার দিকে অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে মনোরমা,কোথায় যাবো?
পল্টূ বলল,মম চলো।
--দেখলি পল্টু কেমন চুপি চুপি চলে গেল।আমাকে আগে কিচ্ছু বলে নি।মনোরমা ছেলেকে বলল।
পল্টু বলল,মিতামাসী মমকে নিয়ে যাও না।
মিতা এসে মনোরমাকে ধরে ধরে ভিতরে নিয়ে গেল।দেবব্রত বাবু মিসেস রাও আর পল্টুকে নিয়ে গাড়ীতে উঠলেন। লক্ষণদা নিচু হয়ে জিজ্ঞেস করলো,পল্টু কাশিমিত্তির ঘাট তো?ঠিক আছে আমরা যাচ্ছি।
এত লোকের মধ্যে পল্টুর নিজেকে খুব একা বোধ হয়।অথচ সারাদিন বাপির সঙ্গে কটাই বা কথা হত? সারাক্ষণ পল্টূ নিজেকে সামলে রেখেছিল,পাটকাঠি জ্বেলে যখন দিলীপ পল্টুর হাতে দিল মুখে আগুণ দেবার জন্য 'হাউ-হাউ' করে কেদে ফেলে পল্টু। দাউ-দাউ করে চিতা জ্বলে ওঠে দিলীপ ধরে নিয়ে পল্টূকে এক জায়গায় বসিয়ে দিল।
পল্টু জিজ্ঞেস করে, লক্ষণদা এলো না তো?
দিলীপ চুপ করে থাকে।পল্টু বলল,লক্ষণদা বলেছিল আসবে।
--শালা আরেকটা ঘটনা ঘটেছে।যত সব ফালতু ব্যাপার।দিলীপ বলে।
--আবার কি হল?
--লায়লি বাড়ী ফেরেনি।আণ্টি এসে লক্ষণদাকে বলল। শালা নিজের মেয়েকে নিজে সামলাতে পারো না?
--দিলীপ বাপি তোর মাকে দেখেছিল?
--হ্যা মাসীমা আমাকে টাকাও দিয়েছে।মা এখন ভাল আছে।কত বড় ডাক্তার ছিল মাইরি।
অনেকে এসেছে শ্মশানে,লক্ষণদা আসেনি।এক সময় চিতার আগুন নিভে এল। মিসেস রাও পল্টুর কাছে এসে বলল,ইটস গ্রেট লস।আমি আসি?
--আপনাকে পৌছে দিচ্ছে।ড্রাইভার কোথায়?
--আমি ট্যাক্সি নিয়ে নেবো। দরকার হলে ফোন কোর।মিসেস রাও চলে গেল।
লক্ষণদা বিল্টুর বাড়ি গেছিল।বিল্টুর মা বলেছে মাসীর বাড়ী বেড়াতে গেছে। বারাসাত না কোথায় থাকে ওর মাসী।অনেক খোজাখুজির পর মণিকাকে নিয়ে থানায় যায় লক্ষণদা।রমেনবাবুও সঙ্গে গেছিল।
থানার বড়বাবু বললেন,বয়ফ্রেণ্ড আছে?
--স্যার ওর বাড়ী গেছিলাম,বাড়ী নেই মাসীর বাড়ী গেছে।লক্ষণ বলল।
--ফুর্তি হয়ে গেলে ফিরে আসবে।আজ রাতটা দেখুন।বড়বাবু বলল।
--আপনি এভাবে কথা বলছেন কেন?রমেনবাবু বলল।
বড়বাবু কয়েক পলক রমেনবাবুকে দেখে বলল,আপনি বাবা?
--না প্রতিবেশি।
--মেয়ের কেউ আসেনি?
মণিকা এগিয়ে যায়,তাকে দেখিয়ে রমেনবাবু বলল,ইনি মা।
বড়বাবু জিজ্ঞেস করে,আপনি মা?আপনার স্বামী নেই?তারপর রমেনবাবুকে লক্ষ্য করে বলল,বিধবা দেখলে দরদ উথলে ওঠে? শোনো লক্ষণ আজ রাতটা দেখো যদি না ফেরে কাল দেখা কোরো।
--আচ্ছা স্যার।থানা থেকে বেরিয়ে লক্ষণ বলল,আমি কথা বলছি তার মধ্যে আপনি কেন কথা বলতে যান?তারপর মণিকাকে বলে,বৌদি বাড়ী যান। কাল সকালে আমি খোজ নেবো।
থানা থেকে পাড়া মিনিট দশেকের হাটাপথ।রমেনবাবু আর মণিকা ঘেষাঘেষি করে পথ চলে।
--দাদা লায়লি ফিরবো তো?
--কেন ফিরবে না?আমি তো আছি মণি।
--লায়লিটা এত বুকা পলায়ে গিয়ে বিয়া করলো নাতো?
রমেনবাবু ডানহাত মণিকার কাধে তুলে দিয়ে বলল,মণি কেন এসব উল্টোপাল্টা ভাবছো?কিচছু চিন্তা কোরনা সব ঠিক হয়ে যাবে।
কাধে মৃদু চাপ দিলেও মণিকা আপত্তি করে না। দুঃসময়ে এই লোকটা তার পাশে দাড়িয়েছে।রমেনবাবু কোমরের উন্মুক্ত জায়গায় হাত নামিয়ে নিয়ে আসে।মণিকা মৃদুস্বরে বলল,রাস্তায় কেউ দেখবো।
রমেনবাবু এদিক-ওদিক তাকিয়ে  হাত সরিয়ে নিল।কিভাবে মণিকাকে সান্ত্বনা দেওয়া যায় সেই চিন্তা এখন রমেনবাবুর।
অনেক রাত হয়েছে ঘুম নেই  খাদিজা বেগমের চোখে, বারান্দায় দাঁড়িয়ে পথের দিকে আকুল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।

6 years ago#19
Joined:27-01-2019Reputation:0
Posts: 24 Threads: 8
Points:920Position:PV1

কথাটা সত্যি ... গল্পের এই পার্ট বড্ড কাঁদিয়ে দেয় ...। আসমাপ্ত গল্পটা আমার সঙ্ঘ্রহে আছে ...।রাত জেগে কপি করেছিলাম ভালোলাগার তাগিদে ... গল্পটার জন্য সাইট আসছি।। hats off to you Monodonil da  


6 years ago#20
Joined:09-09-2017Reputation:0
Posts: 302 Threads: 7
Points:2210Position:PV1

কোন কূলে যে ভীড়ল তরী/কামদেব


  [১৬]


দু-রাত্রি কেটে গেলেও লায়লির কোনো খোজ পাওয়া যায় নি।অবশেষে থানা ডায়েরী নিয়েছে। লায়লিকে কেন্দ্র করে রমেনবাবু এবং মণিকার মধ্যে একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে।মণিকাকে আদর করে মণি বলে ডাকলে কিম্বা গায়ে হাত বুলিয়ে দিলেও মণিকা বাধা দেয় না।এমন কি পাছার কাপড় সরিয়ে রমেনবাবু যখন পাছা টেপে মণিকা নির্বিকার শুয়ে থাকে। রমেনবাবু কি করছে কোথায় টিপছে সে ব্যাপারে কোনো মাথা ব্যথা নেই তার। অন্য পক্ষের এই নিষ্পৃহতা রমেনবাবুকে হতাশ করে,মণিকার শরীর মর্দন করে তেমন আমোদ পায় না। মণিকার শরীরে কি কাম নেই এই প্রশ্ন নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে একসময় মণিকার ঘরে কামদেবের বইয়ের সন্ধান পেয়ে রমেনবাবু উত্তেজিত বোধ করে।
তিনদিন পর পুলিশের গাড়ী লায়লিকে পৌছে দিয়ে গেল।পরদিন অফিসে গেল মণিকা।দুপুরবেলা আগুণ দেখে দিলীপ কিরণ আরো অনেকে ছুটে আসে।লায়লি গায়ে আগুণ দিয়েছে।ইতিমধ্যে আরো লোকজন জড়ো হয়,তারা দরজা ভেঙ্গে আগুণ নিভিয়ে লায়লিকে নিয়ে আর জি কর হাসপাতালে  ভর্তি করে দিল।রমেনবাবু অফিসে গিয়ে মণিকাকে নিয়ে হাসপাতালে এলেন।
আমার পক্ষে বাড়ী থেকে বেরনো সম্ভব নয়,দিলীপের কাছে সব খবর পেতাম। পুলিশ বিল্টুর বাড়ী গিয়ে জোরজার করতে বিল্টুর বাবা চিলেকোঠায় লুকিয়ে থাকা বিল্টুকে বের করে দিল।বিল্টু জেরায় ভেঙ্গে পড়ে পুলিশকে ঘটনার আদ্যোপান্ত বর্ণণা করে। বাজারে মাংসের দোকান আছে নুর মহম্মদের বেলগাছিয়া বস্তিতে একটী ঘরে তুলে সেখানে বিল্টূ লায়লিকে ধর্ষণ করে। তারপর বিল্টুর সম্মতিতে নুরও তাকে ধর্ষণ করে। বিল্টূ বাড়ী ফিরে আসে কিন্ত নুর তারপরও কয়েকবার ধর্ষণ করে ডায়মণ্ড হারবারে একটি রিসর্টে বিক্রী করে দেয়।পুলিশ বিল্টূ আর নুরকে নিয়ে সেই রিসর্টে অভিযান চালিয়ে লায়লি সহ আরো পাঁচ জন মেয়েকে উদ্ধার করে।রিসর্টের মালিক সুদর্শন মাইতি বিল্টু নুর এখন পুলিশ হেফাজতে। লায়লি হয়তো  বিল্টুকে নিয়ে ঘর বাধার স্বপ্ন দেখেছিল, দু-দিন পর লায়লি ডাক্তারদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে বুকভরা অভিমান নিয়ে যাত্রা করলো অন্য লোকে। মৃত্যুকালীন জবানবন্দীতে লায়লি সবার নাম বলে গেছে।
দিলীপ দুঃখ করছিল,লায়লির জন্য খারাপ লাগে। এমন বেপরোয়া বেহায়া হয়ে উঠেছিল সবার সামনে বিল্টুর বাইকে চেপে ঘুরতো।
পল্টু ভাবে সেই নির্লজ্জতার জন্য আজ তাকে লজ্জার হাত থেকে বাঁচার জন্য আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হল।লায়লির মনে ক্ষণিকের জন্য কি বিল্টুর প্রতি সন্দেহের উদ্রেক হয়নি?বিল্টু কি করে নিজের প্রণয়ীকে ভোগ্য করে অন্যের হাতে তুলে দিতে পারলো?নিরুত্তর প্রশ্নগুলো নিয়ে পল্টু নাড়াচাড়া করতে থাকে। দিলীপের সঙ্গে ছিন্ন হয়ে গেছে সম্পর্ক,তাও তার বুকভরা ক্রোধ পারলে বিল্টুকে খুন করে।পল্টুর চোখে জল এসে যায়।বুঝতে পারে না একী লায়লির অকাল মৃত্যুর জন্য নাকি অবমানিত মানবতার জন্য?
দেবমামার ইচ্ছে ছিল না একগাদা টাকা খরচ করে বারোভুতকে আপ্যায়িত করার,মমের জিদের জন্য পাড়ার প্রায় সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হল।দেবমামা অনেক পরিশ্রম করেছে। বাপির মৃত্যুর পর থেকে বাড়ীতে যেত সামান্য সময়ের জন্য অধিকাংশ সময় আমাদের বাড়ীতে পড়ে থাকতো।হাসি খুশি মামী কাজের দিন এল তারপর আর ফিরে যায় নি। একতালায় পাকাপাকিভাবে থাকা শুরু করল।কাজের দিন মিসেস রাও এসেছিলেন ছেলে নিয়ে।ছেলেটিকে দেখে মনে হয় যেন একেবারে বাঙালি,নাম বলল অনির্বান।পল্টুর থেকে কয়েক বছরের বড়। ছাদে খাওয়া দাওয়ার আয়োজন হয়েছে।সবাই প্রায় এসেছে পাড়ার।দিলীপ সব দেখাশোনা করছে। মৌপিয়া বৌদি আমার দিকে তাকিয়ে অদ্ভুত হাসলো। মিতামাসী বাড়ীর সবাইকে নিয়ে এসেছে। সঞ্জয় নীরা এলেও ডিসি কাকু আসেন নি।রাঙাপিসির জন্য পার্শেল পাঠিয়ে দেবার কথা বললেও নিতে রাজী হল না সঞ্জয়। একফাকে নীচে এসে মমের ঘরে উকি দিতে অদ্ভুত দৃশ্য নজরে পড়ল, মিসেস রাও মমকে জড়িয়ে হাউ-হাউ করে কাঁদছেন।আমি দ্রুত আড়ালে সরে গেলাম।কানে এল মমের গলা,না পার্বতী তোমার উপর আমার কোনো ক্ষোভ নেই।অনু আমাকে নার্সিং হোমের কথা বলেছে।
--জানো সিসটার আমি মন খুলে আজই প্রথম কাঁদলাম।
মিসেস রাওয়ের নাম পার্বতী? মম কি করে জানলো?সব গোল পাকিয়ে যায়। দিলীপের ডাকাডাকিতে উপরে যেতে জিজ্ঞেস করলো,নীচে কেউ থাকলে পাঠিয়ে দে।মনে হচ্ছে এই শেষ ব্যাচ।
মিসেস রাও নীচে আছেন,অঞ্জনা আসবে না আগেই বলেছে।নীচে নেমে গলা খাকারি দিয়ে মনোরমার ঘরে ঢুকে পল্টু বলল,রাত হয়ে গেছে ম্যাম আপনি বসবেন তো?
--হ্যা,অনির্বাণ কোথায়?মিসেস রাও জিজ্ঞেস করেন।
--ও খেতে বসেছে। পল্টু বলল।
মনোরমা বলল,চলো উপরে চলো।
মিসেস রাওকে নিয়ে মনোরমা উপরে উঠে গেল।আচমকা জিজ্ঞেস করলো,অঞ্জনা এসেছিল?
--ও বলেছিল আসতে পারবে না।পল্টু বলল।
--তুই একটা টিফিন কেরিয়ারে করে ওকে দিয়ে আয়।
দিলীপ এগিয়ে এসে বলল,পল্টু খেতে বসে যাক কাকীমা আমি দিয়ে আসছি।
--না পল্টুরই যাওয়া উচিত--যা পল্টু।মনোরমা হেসে বলল।
দিলীপ একটা টিফিন কেরিয়ারে সুন্দর করে সাজিয়ে দিল।এতরাত অবধি কি অঞ্জনা না খেয়ে বসে আছে। কিন্তু মমের মুখের উপর কথা বলা যায় না।সারাদিন কিছু খাওয়া হয় নি,এখন সিড়ি ভেঙ্গে তিনতলায় ওঠো।মম দেবমামার ছোটো বোন হলেও মুখের উপর কোনো কথা বলার সাহস নেই।নীচে মামী বিছানা করছে মানে রাতে এখানেই থাকবে?হাসি খুশি এগিয়ে এসে বলল,পল্টুদা কোথায় চললে?
--একটু কাজ আছে।পল্টু হেসে বলল।
--আমরা এখানেই থাকবো।
সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে বেল বাজাবার আগেই দরজা খুলে দিল অঞ্জনা। যেন তারই জন্য অপেক্ষা করছিল।
--এতক্ষণে সময় হল? আমি ভাবলাম বুঝি আজ উপোস করতে হবে।
--তুমি যেতে পারতে।কেউ তো মানা করেনি?
হাত থেকে টিফিন কেরিয়ার নিয়ে টেবিলে একটা প্লেট নিয়ে বসে বলল,দেব তুমি খেয়েছো?
--কি করে খাবো?সবাইকে খাইয়ে তবে আমার খাওয়া।
ভাত মাখতে মাখতে খিল খিল করে হেসে উঠল অঞ্জনা। একগ্রাস তুলে পল্টুর মুখের সামনে তুলে ধরে বলল অঞ্জনা,তোমার পরে আমি খাবো।
পীড়াপিড়িতে বাধ্য হয়ে পল্টু হা-করে অঞ্জনা ওর মুখে ভাত তুলে দিয়ে খাওয়া শুরু করে। তারপর বলল,দেব তুমি যাও।সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।
পল্টু বাড়ী ফিরে দেখল মম আর মিসেস রাও না খেয়ে বসে আছে।তিনজনে একসঙ্গে খেতে বসলো। দেবমামা ব্যাজার মুখে ঘোরাঘুরি করছে।ক্যাটারারের লোকজন গোছগাছ শুরু করেছে।মিসেস রাওকে মম নীচ পর্যন্ত পৌছে দিল।
--দিদি কোনো দরকার পড়লে আমাকে খবর দেবে।আসি।
মম অনির্বাণের মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করলো।পল্টুর মনে রহস্য ঘনীভুত হয়।
অনির্বান কি করে মিস রাওয়ের ছেলে হয়?তাহলে ওর বাবাই বা কে?
  What's going on
   Active Moderators
  Online Users
All times are GMT +5.5. The time now is 2025-01-30 11:28:45
Log Out ?

Are you sure you want to log out?

Press No if youwant to continue work. Press Yes to logout current user.